ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের শাখারীদাহ গ্রামের এক সুদখোর মহাজনী কারবারী সেলিনা খাতুনের পাতানো ফাঁদে পড়ে অসহায় হয়ে পড়েছে হাড়ি পাতিল ব্যবসায়ী পল্টু সহ ঐ গ্রামের কয়েকটি পরিবার।
সুদখোর মহাজনী কারবারি প্রভাবশালী সেলিনা খাতুনের অত্যাচারে অতিষ্ট ঐ পরিবারের সদস্যরা রবিবার সকাল ১১ ঘটিকায় হরিণাকুন্ডু উপজেলা পরিষদ মোড়ে এক মানব বন্ধন করে। এ সময় তারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রেসক্লাব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্টু, বজলু, নাজের আলী, আলতাফ হোসেন ও ফিরোজ আলী মহাজনী কারবারী সেলিনা খাতুনের বিচার দাবী করেন।
লিখিত অভিযোগে অসহায় ঐ পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা একজন সামান্য হাড়িপাতিলের ব্যাবসায়ী, শাখারীদাহ বাজারের বজলুর মিলের মালিক সেলিনার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে নগদে ও বাকিতে কিছু খুদ, চাউল সরিষার তৈল,নারকেল তৈল নিয়ে থাকি যা বছর শেষে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করিলেও নগদ দেওয়া টাকা জমা না করিয়া চক্রবৃদ্ধি হারে কয়েক শতগুন বাড়িয়ে আমাদের উপর মিথ্যা মামলা দায়ের করে, যা সঠিক নয়।
সরোজমিনে ঘটনার সত্যতা জানতে গেলে জানতে ঘটনাস্থলে গেলে পল্টু সহ ভুক্তভোগীরা সহ অনেকে উপস্থিত হয়ে বলেন,আমরা হতদরিদ্র পরিবারের মানুষ, সামান্য হাড়িপাতিলের ব্যাবসায়ের ওপর নির্ভর করে চলে আমাদের সংসার। এর মাঝে বন্ধু সেজে সেলিনা খাতুন, উপকারের নামে আমাদের পেটে খাওয়ার জন্য তার মিলের চাল-খুদ ও তৈল দিয়ে এখন ৬লক্ষ টাকা দাবি করে মিথ্যা মামলা করেছে যা সম্পর্ণ মির্থ্যা ও বানোয়াট। জাল ষ্ট্যাম্পে আমাদের নামে আদালতে মামলা করেছে যা সাজানো ও মিথ্যা। আমরা কিস্তি তুলি কিস্তি দিই কিন্তুু কোন ষ্টাম্পে কোন স্বাক্ষর করিনি অথচ নোটিশ পাঠিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলার শিকার পল্টু বলেন, আমি ছাড়াও তার পাতানো সুদের ফাঁদে পড়ে গ্রামের অনেকে ৫ হাজার টাকার চাল, তৈল নিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এভাবে সে আমার মত গ্রামের আরও অনেক মানুষের কাছ থেকে এভাবে ফাঁদে ফেঁলে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
এ ব্যাপারে স্থানিয় জনপ্রতিনিধি ও ইউপি মেম্বর জাহাঙ্গীর আলম জানান,আপনি দেখুন এই বাড়ীতে কি ৬ লক্ষ টাকা দেওয়া যায়, যায় না। তবে সামান্য কিছু টাকা হয়ত পেতে পারে,যার জন্য অনেক বার স্থানীয় ভাবে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মহাজনী কারবারী সেলিনা খাতুনের নিকট জানতে চাইলে তড়িঘড়ি করে পালিয়ে যান। এ সময় তার মেয়ে ও স্বামী বলেন, আমরা পল্টু সহ অনেকের কাছে নগদ টাকা পাব যার প্রমাণ ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আছে।
এ দিকে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, এ ভাবে বিনা লাইসেন্সে মহাজনী কারবারী সম্পূর্ণ অবৈধ ও বে-আইনী, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেপ্র/ হরিণাকুন্ডু সংবাদদাতা