ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালী অঞ্চলের উপর দিয়ে গত রোববার বিকালে হঠাৎ ২০ মিনিটের রেকর্ড পরিমাণ শিলা বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অত্র অঞ্চলের শত শত বিঘা জমির ইরি-বরো ধান ,পানের বরজ , পেয়ারা বাগান ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ও ঘরবাড়ি।
এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ শিলা বৃষ্টির কারণে অত্র অঞ্চল এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রচুর পরিমানে শিলা বৃষ্টি হয়।
কেশবপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের জানান ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে আমার চোঁখে দেখা আজকেই সব থেকে বেশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবথেকে বেশি। অনেকের ঘরের টিন ফুটো হয়ে গেছে। আর এত শিল পড়ে রয়েছে যা পরের দিন দুপুর পর্যন্ত পড়ে রয়েছে।
এক কথায় শিলের পরিমাণ এতই বেশি ছিল যে স্তুপে স্তুপে পরিণত হয়েছে। বিষয়খালী অঞ্চলের বিষয়খালী, কেশবপুর, মহারজপুর, কলফাডাঙ্গা, পরমনন্দপুরসহ আশেপাশের এলাকায় প্রচুর পরিমাণে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়।
শিলের পরিমাণ এতই বেশি ছিল যা বিগত ২০/২৫ বছরেও এত শিলাবৃষ্টি হয়নি বিষশখালী অঞ্চলের উপর। শিলা বৃষ্টির কারণে বিষশখালী অঞ্চলের চলতি মৌসুমের ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
কেশবপুর গ্রামের ছামসুল সরদার জানান, তাঁর দুই বিঘা জমির পানের বরজ ও এক বিঘা জমির পেয়ারা শিলাবৃষ্টিতে সব ঝরে গেছে।এছাড়াও কেশবপুর গ্রামের আম গাছের মুকুল ঝরে গেছে,গম ও ভুট্টা ক্ষেত জমিতে মিশে গেছে।
ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের বিষয়খালী কড়ইতলা নামক স্থানে রাস্তার দু’ধারে এখনো পড়ে আছে প্রচুর পরিমাণ শিল। যা দেখতে মোটরসাইকেল-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহ থেকে মানুষ নেমে দাঁড়িয়ে দেখছে এবং ছবি তুলছে। অনেকেই বলছে ইতিহাসে এর আগে তারা কখনো স্ব-চোঁক্ষে দেখেনি এমন শিল। নিম্নআয়ের মানুষের বাড়িতে পড়েছে কান্নার রোল।
বিষয় খালি গ্রামের আসাদ জানান তাদের তিনটি ঘরের টিন একদম যারা যারা হয়ে গেছে। যা সম্পূর্ণ টিন না বদলালে ঘরে আর থাকার মতন কোনো উপায় নেই। একসাথে ৩ টা ঘরের টিন নষ্ট হয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
অপরদিকে বিষয়খালী গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, তার বাড়ির ঘরের টিনের চালা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে ১৫/২০ বান টিন লাগবে তার ঘর মেরামত করতে।
বিষয়খালী গ্রামের শরিফুল ইসলাম ও রবিউল ইসলামের ৪ টি ঘরের সম্পূর্ণ টিন ফুটো হয়ে যারা যারা হয়ে গেছে। ৪ টি রুমের প্রায় ৮ বান টিন লাগবে মেরামত করতে যা তাদের পক্ষে এখন মেরামত করা সম্ভব নয়।
এজন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা দুই ভাই। বিষয়খালী গ্রামের আজিজুলের টিনের ঘর নষ্ট হয়ে গেছে শিলাবৃষ্টিতে।
৭ নং মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ খুরশিদ আলম মিঞা জানান, শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ের পর আমি পুরো ইউনিয়েনের প্রত্যেকটি গ্রাম ঘুরে ঘুরে দেখেছি।
ক্ষতি গ্রস্থ পরিবারের মানুষের সাথে কথা বলেছি। যাদের কমদামের অর্থাৎ নর্মাল টিন দিয়ে ঘর করা তাদের ঘরের টিন ক্ষতি হয়েছে বেশি। এছাড়াও অত্র অঞ্চলের ধান,গম,ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আম গাছের মুকুল ঝরে গেছে। ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
যাতে করে আমার মহারাজপুর ইউনিয়নের ক্ষতি গ্রস্থ মানুষগুলো সরকারি সাহায্য পায় সে ব্যবস্থা আমি গ্রহণ করবো ইনশাল্লাহ। ইউনিয়ন বাসির সুখে-দুখে আগেও যেমন পাশে ছিলাম। এখনো তেমনি পাশে থাকবো এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
পরিশেষে জেলা প্রশাসকের মধ্যমে সরকারের কাছে আমার ইউনিয়নের শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সাহায্যের আশা করছি। এছাড়াও কালবৈশাখী ঝড়ে বিষয়খালী অঞ্চলের শতাধিক বিদ্যুতিক পোল হেলে পড়েছে। আম গাছের মুকুল ঝরে পড়েছে।