হেরোইন বিক্রির পাওনা টাকা আদায় করতেই জামালকে শ্বাসরোধ করে হত্যা শেষে তার ইজিবাইক ছিনতাই করে মাদক বিক্রেতা বাচ্চু মিয়া। এর আগে পূর্বপরিকল্পনামতে মেহেরপুর শহরের সন্নিকটে ময়ামারী রাস্তার লিচু বাগানে বসে দুজনে হেরোইন সেবন করে।
এর মাত্র এক দিনের ব্যবধানে সে ইজিবাইক বিক্রি করে কুষ্টিয়াতে। এসবই ছিল মাদক ব্যবসায়ী ঘাতক বাচ্চুর পূর্বপরিকল্পনা।
জামাল হত্যার প্রধান আসামি বাচ্ছু মিয়াকে আটকের পর পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে এসব কথা জানিয়েছে সে। বাচ্চু মিয়া মেহেরপুর সদর উপজেলার শোলমারী গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।
তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) ও সদর থানা পুলিশ যৌথভাবে গতকাল সকালে অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়ার কালিশংকরপুর এলাকা থেকে বাচ্চু মিয়াসহ তিনজনকে আটক করেন।
তারা হলেন বাচ্চু মিয়ার বোন সোনালী খাতুন ও ইজিবাইক ক্রেতা কুষ্টিয়ার বাঁশগ্রামের বুলবুল শেখের ছেলে রাজিব শেখ।
জানা গেছে, বাচ্চু মিয়া ও অটো চালক জামাল একসঙ্গে মাদক সেবন করতেন। বাচ্চুর কাছ থেকে মাঝেমধ্যে নিহত জামাল হেরোইন কিনতেন। ইতোমধ্যে অনেক টাকা পাওনা হয়েছে জামালের কাছ থেকে। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরেও সে টাকা পরিশোধ করতে ব্যার্থ হন জামাল।
ঘটনার দিন কৌশলে জামালকে তার গ্রামের বাড়ি গাংনী উপজেলার ধলা গ্রাম থেকে মেহেরপুর শহরের ময়ামারী সড়কে নিয়ে আসে। সেখানে একটি লিচু বাগানে দুজনে নেশা করার পর বাচ্চু মিয়া নেশাগ্রস্থ জামালকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে । সেখানে লাশ ফেলে রেখে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ইজিবাইকটি কুষ্টিয়ার আলমপুর নামকস্থানে বাবুল শেখের ছেলে রাজিব শেখের কাছে এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এক লাখ টাকা দিয়ে রাজীব কিনলেও ইজিবাইকের চার্জার সহ অন্যান্য কাগজপত্র দেওয়ার পরে বাকি ৩০ হাজার পরিশোধ করার কথা তার।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মেহেরপুর ডিবির ওসি সাইফুল আলম, মেহেরপুর সদর থানার ওসি তদন্ত মেজবাহ উদ্দিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স কুষ্টিয়ার কালিশংকরপুর গ্রামে অভিযান চালান।
এদিকে গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে জামাল উদ্দীনের ভাই আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
শুক্রবার দিবাগত রাতে বাচ্চু মিয়াকে আটক করার পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ইজিবাইকটি উদ্ধার করেন।
গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকালের দিকে ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে মেহেরপুর শহরতলির ময়ামরী সড়কের একটি লিচু বাগান থেকে অটো চালক জামাল উদ্দীনের লাশ উদ্ধার করেন।
উল্লেখ্য,জামাল হত্যার সাথে জড়িত আটক শোলমারী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রি, চুরি ডাকাতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কিছুদিন আগেও মাদক মামলায় জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছে। তার নামে হেরোইন, ফেনসিডিল ও গাঁজা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। মামলাও রয়েছে একাধিক। পুলিশের ভয়ে সে পার্শ্ববর্তি ভারতেও পালিয়ে ছিলো দীর্ঘদিন। জামাল হত্যা মামলা তাকে আটকের পর এলাকার মানুষ মুখ খুলতে শুরু করেছে।