নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ অর্থাৎ মাস্ক নেই সেবা নেই, তবে এই কথার ভিত্তি নেই। কথাটি শুধুমাত্র কাগজেই সীমাবদ্ধ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি ব্যাপকভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রয়োজনে সামাজিক আন্দোলন, প্রচারাভিযানসহ যেভাবেই হোক এটি নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি। গত ২৫ অক্টোবর মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশ দেন। তখন জানানো হয়েছিল, মাস্ক ছাড়া এলে কাউকে সরকারি ও বেসরকারি অফিসগুলোতে সেবা দেওয়া হবে না। তবে প্রথমদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কিছুটা বাস্তবায়ন হলেও বর্তমানে এর চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। সরেজমিনে মেহেরপুরে সরকারি, বে-সরকারি অফিস, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, গণপরিবহনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঘুরে দেখা গেছে দরজার সামনে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ লেখা থাকলেও তা মানছেন কেউ । অফিসের কর্মকর্তা থেকে কর্মচারীদের অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। আবার অনেকেই কানে, থুতনীতে ঝুলিয়ে রেখেছেন। অফিসে সেবা নিতে আসা মানুষগুলোর মুখেও নেই মাস্ক। করোনাকালীন মাস্ক ব্যবহারে গুরুত্ব থাকলেও বর্তমানের অবস্থা একেবারেই ভিন্ন। করোনার শুরুতে সরকারি, বেসরকারি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাস্ক বিতরণ ও ব্যবহারে জোরদার ভূমিকা পালন করলেও পরিশেষে এর ফলাফল শূন্য। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক ব্যবহারে সকলেই উদাসীন। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ‘নো মাস্ক নাে সার্ভিস’ কথা লিখে যেন দায়মুক্তি পেয়েছেন।
এদিকে করোনার প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে পেতে হাত ধোয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর শহরের বিভিন্ন স্থানে বেসিন স্থাপন করে। অথচ ওই বেসিনগুলো কোন উপকারে আসছে না। নেই হাত ধোয়ার সাবান নেই পানি। অযত্ন অবহেলায় সবগুলো বেসিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও মোহাঃ মকলেছুর রহমান বলেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। যারা সেবা নিতে হাসপাতালে আসছেন তাদেরকে মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হলেও উদাসীন তারা। ভর্তি রােগী ও তার স্বজনদের ক্ষেত্রে একই অবস্থা। কেউ যদি নিজে সচেতন না হয় তাহলে জোর করে কিছু করা যায় না। নো মাস্ক নো সার্ভিসের কথা বলা হলেও স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে পালন করা সম্ভব না। কারণ, রোগীদের সেবা তো দিতেই হবে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রয়োজন। মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুল আলম জানান, ইতোমধ্যে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং অফিস আদালতে মানুষ এলে তাদের হাত ধুয়ে ভেতরে প্রবেশ যাতে করতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে বলেও জানান তিনি।