মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করার অভিযোগে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার সকালে দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এসকে সিনহার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে হওয়া একটি মামলা উচ্চ আদালতে ডিসমিস করার পরও প্ররোচিত হয়ে মামলাটির রায় পরিবর্তন করা হয়। মামলাটি ডিসমিস করতে দুই কোটি টাকা ও অন্য একটি ব্যাংক গ্যারান্টির আড়াই কোটি টাকার অর্ধেক ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উৎকোচ চান এসকে সিনহা।
পরে এই মামলাটি তদন্তের জন্য দুদকে যায়। দেড় বছরের তদন্তে সিনহার বিরুদ্ধে নাজমুল হুদার মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে দুদকে। আর মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করায় নাজমুল হুদার বিরুদ্ধেই মামলা করে দুদক।
নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে দুদকের সচিব মোহাম্মদ দিলোয়ার বখত বলেন, নাজমুল হুদা যে মামলাটি করেছেন, সেটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। দুদক আইনের ২৮ এর ২ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন আর সেটি যদি তদন্তে বেরিয়ে আসে, তাহলে অভিযোগ দায়েরকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে।
এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। যেহেতু অভিযোগটি প্রমাণিত হয়নি, তাই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় নাজমুল হুদা গ্রেফতার হতে পারেন কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, আইন অনুযায়ী যদি আদালত থেকে ওয়ারেন্ট পাওয়া যায়, তাহলে তিনি গ্রেফতার হবেন।
এর আগে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি অর্থ পাচারের অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার স্ত্রী অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা এবং দুই মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা ও শ্রাবন্ত্রী আমিনা হুদার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে।
একটি মামলার এজাহারে বলা হয়, সিগমা হুদা ও অন্তরা সেলিম হুদা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ৩ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড স্টার্লিংয়ের সমপরিমাণ ৪ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা যুক্তরাজ্যে পাচার করেছেন। ওই টাকা দিয়ে ২০০৩ সালের ২৬ জুন লন্ডনের ওয়াটার গার্ডেনসের বারউড প্যালেসে একটি ফ্ল্যাট কেনেন তারা।
আরেকটি মামলার এজাহারে বলা হয়, সিগমা হুদা ও শ্রাবন্তী আমিনা হুদার ২ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড স্টার্লিংয়ের সমপরিমাণ ২ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা যুক্তরাজ্যে পাচার করেছেন। ওই টাকা দিয়ে ২০০৬ সালের ১২ ডিসেম্বর হেলনি কোর্টের ডেনহাম রোডে একটি ফ্ল্যাট কেনেন তারা। অর্থাৎ বিদেশে অর্থ পাচার করে দুটি ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগে মামলা করে কমিশন।
সুত্র-যুগান্তর
মেপ্র/আরজেএম