কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কৃষকদের মাঝে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোঁকা-মাকড় দমনে পার্চিং বা ডালপালা পোঁতা (গেড়ে দেয়া) কার্যক্রম ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে।
দিনদিন এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় রাসায়নিক কীটনাশক সারের ব্যবহার কমে আসছে। এর সুফলও পাচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা। চাষীরা তাদের আবাদি জমিতে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক এই পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছে। এলাকার কৃষকরা ধান ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতিতে আগ্রহ বেড়েছে।
মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো আবাদে ইতোমধ্যেই মাঠে সবুজের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও পোঁকা মাকড় থেকে ফসলকে রক্ষা করতে কৃষকদের রাসায়নিক বালাই নাশকের পরিবর্তে ধান ক্ষেতে পার্চিং করে বা ডাল-পালা পুঁতে পোঁকা দমন করা সম্ভব এবং পোঁকাড় বংশ বিসত্মার রোধ করাও সম্ভব।
উপসহকারী কৃষি অফিসার গোলাম হোসেন ও ময়নুল ইসলাম রাজিব জানান, পার্চিং করা ধান ক্ষেতের ডাল-পালায় পাখিরা বসে ধানের ক্ষতিকর পোঁকা খেয়ে ফসল রক্ষা করে। আর এ পদ্ধতি গ্রহণ করতে কৃষকদেরকে কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ ও উৎসাহ দিচ্ছেন। এতে কৃষকদের ধান উৎপাদন খরচ কম পড়বে এবং প্রাকৃতিক ভাবে পোঁকামাকড় দমন হবে বলেও জানান তারা।
মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, জমিতে পার্চিং করা বা ডাল পালা, বাঁশের কঞ্চি পোঁতা (গেড়ে দেয়া) পদ্ধতিটি খুবই সহজ। এর তেমন কোন খরচও নেই। পাখি ডালে বসে মাজরা পোঁকার মথ, পাতা মোড়ানো পোঁকা মথ ও ফড়িং জাতীয় পোঁকাগুলো সহজেই ধরে খেতে পারে। এতে পোঁকা আর বংশ বিস্তার করতে পারে না। এমনকি বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি জমিতে কোন প্রকার রাসায়নিক বালাই নাশক একেবারেই ব্যবহার করেন না।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, ধান ক্ষেতে পার্চিং বা ডাল পোঁতা জৈবিক পোঁকা দমন এটি খুবই কার্যকর পদ্ধতি। বিশেষ করে মাজরা পোঁকাড় আক্রমন থেকে ফসল রক্ষা করতে এটি খুবই কার্যকর পদ্ধতি। একটি মাজরা পোঁকার মথ ২ শ’ থেকে আড়াই শ’ ডিম পাড়ে। ডিম থেকে কিড়া বের হয়ে একটি করে ধানের কুঁশি কাটে। যা কৃষকদের খুব ক্ষতি সাধন করে। আর এই ক্ষতিকারক পোঁকার মথ পার্চিং করা ডালে বসে পাখি খেয়ে ফেলে।
এটি পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় কৃষকরা একটু চেষ্টা করে জমিতে ডাল পালা পুঁতে দিলেই হলো। আমরা এ পদ্ধতির জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করছি।
মেপ্র/আরজেএম