সরিষা ক্ষেতে মৌচাষের ফলে একদিকে ফলন বাড়ছে এবং মধু সংগ্রহের ফলে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবাইলে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে থাকা সরিষা ক্ষেতে স্থাপিত মধু মামুনের মৌ-খামার পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস।
তিনি বলেন, একসময় মিরপুর উপজেলায় ব্যাপক পরিমাণ তামাকের চাষ হতো। এই মৌ চাষের মাধ্যমে সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। আমার খুবই ভালো লাগছে এই ধুবাইলের পুরো মাঠজুড়েই হলুদ আর হলুদ দেখে।
অল্প খরচে এবং স্বল্প সময়ে বেশি উৎপাদন এবং লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে সরিষা চাষে দিন দিন আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরিষা জনপ্রিয় করতে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
মৌ-খামারের মধু মামুন বলেন, নিজে কিছু করার চেষ্টা এবং অন্য মানুষদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতেই আমার এ পথচলা। আমার খামারে উৎপাদিত মধু দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা হয়ে থাকে।
তিনি জানান, কুষ্টিয়ার মিরপুর ও নাটোরের ও চলনবিল সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ চলছে। মাত্র দুই সপ্তাহেই তিনটি খামার মিলে সপ্তাহে ২৫০ কেজি মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বছর ২০০টি বাক্সের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করছি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি ১৫ টন মধু।
মিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, মৌমাছি পরাগায়নে সহায়তা করছে বলেই ফলে সরিষা আগের তুলনায় ফলন আরও ৩০ শতাংশ বাড়বে। চলতি অর্থ বছরে এই মিরপুর উপজেলার একটি মাঠ থেকেই ৩ টনের উপরে মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে সরিষার আবাদ হয়েছিলো ১০৫০ হেক্টর জমিতে। বর্তমানে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করায় তা বেড়ে ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।
পরে ইউএনও এবং কৃষি কর্মকর্তারা বিনা সরিষা-১০ জাতের সরিষা প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এ সময় মিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জোয়ার্দ্দার, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সহকারী অফিসার ফরহাদ শরীফসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।