প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় আরো ৪৬টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার ঘর পেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে নির্মিত এসব ঘর এবং বন্দোবস্তকৃত জমির কাগজপত্র উপকারভোগি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ৭টি জেলা এবং ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেন। এর ফলে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত জেলার মোট সংখ্যা নয়টি এবং উপজেলার সংখ্যা ২১১টি।
গতকাল বুধবার সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ৪৬টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির মালিকানা দলিল হস্তান্তর করা হয়।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ঘরের চাবি ও জমির মালিকানা দলিল হস্তান্তর করেন।
এসময় তিনি বলেন, অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা- চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। বর্তমান সরকার মানুষের শিক্ষা-চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি বাসস্থান গড়ে দিয়েছে, যা অনেক উন্নত রাষ্ট্র দিতে পারেনি। এতোদিন যাদের ঠিকানা ছিল গাছের তলায়। কিংভা ক্যানেলের ধারে। এখন তারা স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়ে খুশি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পবাসী। এছাড়া ঘরের পাশাপাশি মাছ চাষের জন্য খাল ও সবজির চাষে জন্য জমি পেয়ে জীবনই বদলে গেছে তাদের। ঘর পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়েছে অনেকেই।
তিনি বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের মত একটি মহতী উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরাসরি সম্পৃক্ত করায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের এমন একটি ভালো কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন, যার কারণে আমরা কৃতজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, যাদের কিছুই ছিল না, যারা ক্যানেলের ধারে থাকতো, আবার কেউ কেউ অন্যের উঠানে থাকতো। তাদের স্থায়ী ঠিকানার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এই জমি ও ঘর তাদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাইতো তারা চিরকৃতজ্ঞ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভুমিহীনদের জন্য আবাসন প্রকল্পের বাসীন্দাদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গিকার সকলের জন্য আবাসন ব্যবস্থা, সেটি বাস্তবায়ন হয়েছে। ভুমিহীনদের বিভিন্ন প্রশিক্ষনের মাধ্যমে ও সবজি উৎপাদনসহ বিভিন্ন আর্থিক উন্নয়নের ব্যবস্থা করতেও উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের দেয়া ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর আবেগঘন প্রকল্প আবাসন, তাই যত্মসহকারে নির্মান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিরপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ, মিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. আব্দুল হালিম, মিরপুর পৌরসভার মেয়ার হাজী এনামুল হক মালিথা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জোয়ার্দার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মর্জিনা খাতুন, উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল করীমসহ, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, উপকারভোগীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মিরপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে ৪৬টি ঘর হস্তান্তর করেন। এরমধ্য দিয়ে আমাদের এই মিরপুর উপজেলা ভূমিহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হলো। এরআগে আমরা মিরপুর উপজেলায় ২৭১টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দিয়েছি।