আত্মবিশ্বাসী ছিল বাংলাদেশ সেন্ট কিটসে তিন ম্যাচেরও ওয়ানডে সিরিজের আগে। কেননা ২০১৮ সালের পর উইন্ডিজ সফরে গিয়ে এই ফরম্যাটে হারেনি তারা। দীর্ঘ ছয় বছরে সেখানে পাঁচ ম্যাচ খেললেও হারেনি একটিতেও। এছাড়া সব মিলিয়ে দলটির বিপক্ষে টানা ১১ জয় তো সঙ্গী হিসেবে ছিলই। তবে রবিবার সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে টানা হারের বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে এসেছে স্বাগতিকরা।
আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। এই ম্যাচে বাংলাদেশের লড়াই সিরিজে ফেরার। আর তা না পারলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই স্বাদ নিতে হবে সিরিজ হারের। তাই জয়ের বিকল্প নেই মিরাজ বাহিনীর সামনে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের কাছে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে হেরেছে। ঐ ম্যাচে টস দিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রান করে সফরকারীরা। ঐ রান ১৪ বল আগেই তাড়া করেছে ক্যারিবীয়রা। পাশাপাশি হয়েছে একটি রেকর্ডও। ওয়ার্নার পার্কে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়।
এর আগে ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৬৫ রান তাড়া করে জিতেছিল স্বাগতিকরা। এমন জয়ের পর এবার স্বাভাবিকভাবেই তাদের নজর থাকবে সিরিজ জেতার দিকেই কেননা লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজ জিতেছিল ২০১৪ সালে। এবার যেহেতু সুযোগ হয়েছে তা লুফে নিতেই চাইবে সেটাই অনুমেয়। তবে কাজটা যে সহজ হবে না। কেননা এবারের উইন্ডিজ সফরটা শুরু হয়েছিল হার দিয়ে। অ্যান্টিগাতে হেরেছিল প্রথম টেস্ট। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে ফিরে এসেছিল সমতায়। ওয়ানডেতেও দলের প্রতি সমর্থকদের তেমনি প্রত্যাশা করছে।
এদিকে প্রথম ম্যাচ ব্যাটিংবান্ধব উইকেটেও সফরকারী ব্যাটাররা ছিল নিষ্প্রাণ। খেলেছে টেস্ট মেজাজে তাতে দলীয় সংগ্রহ হয়েছে কম। নিজেদের গোটা ইনিংসে ৩০০ বলের বলে ১৫৫টি ‘ডটবল’ খেলেছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক মিরাজ নিজে চারে নেমে ৭৪ রান করতে খেলে ফেলেছেন ১০১ বল। শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ ও জাকের আলিও আরেকটু সক্রিয় হয়ে আরেকটু চালিয়ে খেলতে পারতেন। তাহলে ৩২০-৩৩০ হতে পারত স্কোর।
তারপরও ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের অধিনায়ক মিরাজ হারের দায় চাপিয়েছেন বোলারদের ওপর। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা সন্তুষ্টই ছিলাম (নিজেদের ব্যাটিং ইনিংসে রান নিয়ে)। এই ধরনের উইকেটে ২৯৫ খুব ভালো স্কোর। তাদেরকে কৃতিত্ব দিতেই হবে, তারা অনেক ভালো খেলেছে। বিশেষ করে শেই হোপ ও রাদারফোর্ড, ভালো জুটি গড়েছে তারা। মাঝের সময়টায় আমরা উইকেট নিতে পারিনি। আমাদের বোলারদের জন্য দিনটি কঠিন ছিল।’
উইন্ডিজদের ইনিংসে ভালো শুরু এনে দিয়েছিল বাংলাদেশের পেসাররা। দলীয় ২৭ রানেই দুই ওপেনার ব্রান্ডন কিং ও এভিন লুইসকে সাজ ঘরে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব ও নাহিদ রানা। সেসময় খানিকটা চাপে পড়লেও ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিক ব্যাটাররা। এ নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘শুরুটা (বোলিংয়ে) খুব ভালো করেছিলাম আমরা, বিশেষ করে নাহিদ রানা, তাসকিন ও তানজিম ভালো বল করেছে। কিন্তু মাঝে ওভারগুলোয় আমরা উইকেট বের করতে পারিনি। তবে এই ধরনের উইকেটে এমন কিছু হতেই পারে। উইকেট খুব ভালো এবং অবশ্যই ওদেরকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।’
তবে বরাবরের মতোই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা জানিয়ে পরের ম্যাচে ভালো কিছু করার আশারবাণী শোনান মিরাজ। বলেন, ‘অনেক কিছুই শিখতে পারি আমরা। আজকে বেশ কিছু ভুল করেছি। পরের ম্যাচে আরো ভালো করায় মনযোগ দিতে হবে আমাদের। এখনো দুই ম্যাচ বাকি আছে। জয়ের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে আমাদের। আমি এখনো মনে করি, আমাদের ভালো সুযোগ আছে (সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর)।’
সূত্র: ইত্তেফাক