মুজিবনগরের বল্লভপুর গ্রামের নেদারল্যান্ডের বংশোদ্ভূত এলাকার পরিচিত মুখ বৃক্ষ প্রেমিক মি: পিটার মারিয়া গ্রুন্ডিম্যান (৬৯) (ইনবার্ট) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
আজ সোমবার সকাল ৭ টার দিকে অসুস্থতা বোধ করলে তিনি বল্লভপুর মিশন হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০ টার সময় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মি: ইনবার্ট এর শ্যালক বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বাবুল মল্লিক মেহেরপুর প্রতিদিন কে জানান, মি: ইনবার্ট স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তীতে চার্চ অব বাংলাদেশ এর মাধ্যমে মিশনারি হিসাবে সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করার জন্য এলাকায় আসেন। তিনি রতনপুরে বেকার যুবকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। পরে তিনি বল্লভপুর গ্রামে সোশ্যাল সার্ভিস নামে একটি এনজিওর প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি এলাকার বিভিন্ন দরিদ্র অসহায় মানুষদের ঘর তৈরি সহ বিভিন্ন হাতের কাজের উপর উদ্বুদ্ধ করেন এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে দিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করে গড়ে উঠতে সহায়তা করা। তিনি সোনাপুরে কিছু দরিদ্র মানুষকে ঘর তৈরি করে দেন যেটা এখন ইনবার্ট পাড়া নামে পরিচিত।
এদেশে আসার পরে এলাকায় সামাজিক উন্নয়ন উন্নয়নমূলক কাজ করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে বল্লভপুর হাসসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসসপাতালের নার্স বল্লভপুর গ্রামের মি: অজিত মল্লিকের মেয়ে মঞ্জু মল্লিকের সাথে প্রণয়ে জড়িয়ে পড়েন এবং ১৯৮৬ সালে তারা ভালোবেসে বিয়ে করেন।
তিনি মুজিবনগর কে সবুজায়নের আওতায় আনার জন্য মুজিবনগর থেকে দর্শনা পর্যন্ত এবং মুজিবনগর থেকে চুয়াডাঙ্গা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশ দিয়ে বৃক্ষরোপণ করেন যে বৃক্ষগুলো এখন রাস্তা সম্প্রসারিত করার জন্য কাটা হচ্ছে এবং সেই বৃক্ষ থেকে সরকার কোটি কোটি টাকা আয় করছেন। ৯০ সালের দিকে তিনি ঢাকাতে ইউএনডিপি নামে একটি দাতা সংস্থার কনসাল্টেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই অবস্থায় তিনি সিনারজী, কনজারভেশন লিমিটেড নামে একটি বনায়ন সংস্থা খোলেন। তিনি চিটাগাং চট্টগ্রাম পাহাড়ের ৩ একর জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন প্রকারের বনজো গাছ রোপন করেন। পরবর্তীতে ভারত এবং নেপালের বিভিন্ন এলাকায় গাছ রোপনের উপরে কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০০ সালের দিকে স্ত্রীসহ নিজ দেশ নেদারল্যান্ডে চলে যান পরবর্তীতে মানুষের ভালোবাসার টানে বাংলাদেশের ফিরে আসেন এবং সেই থেকে তিনি মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামে সস্ত্রীক বসবাস করে আসছেন। তিনাদের এ্যান্না মেরি নামে একটি কন্যা সন্তান আছেন যিনি এখন নেদারল্যান্ডে বসবাস করেন।
গতকাল সোমবার সকালে তিনি অসুস্থতা বোধ করলে বল্লভপুর মিশন হাসপাতালে ভর্তি হন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সকাল সাড়ে দশটার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।সোমবার সন্ধ্যা ৭ টার সময় বল্লভপুর মিশন কবরস্থানে তাকে সমাধীস্থ করা হয়েছে।