মুজিবনগরে পর্ণোগ্রাফী ও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় সম্রাট আলী (১৯) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ। সম্রাট আলী মুজিবনগর উপজেলার বাবুপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার আবরুল ইসলামের ছেলে।
গত বুধবার (৭সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে আবরুল ইসলামের বাড়িতে মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন। মুজিবনগর উপজেলার বাবুপুর গ্রামের নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে তুলে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে কয়েকদিন যাবৎ ধর্ষণ শেষে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে ইমু ও ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ ছড়ানোর অপরাধে ওই ছাত্রী একটি মামলা করেন। ধারা ৮(১), ৮(২) ৮(৩) ২০২০ সালের পর্ণোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইন তৎসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৭/৯(১) ধারায় মামলাটি করা হয়। যার মামলা নং ৪, তারিখ ০৭-০৯-২০২২ ইং। মামলার প্রধান আসামি একই গ্রামের আবরুল ইসলামের ছেলে সম্রাট আলী ও দ্বিতীয় আসামি তার বন্ধু মো: লালুর ছেলে মকলেস (২০)।
মামলার বাদী ওই ভিকটিম তার এজাহারে অভিযোগ করেন, প্রধান আসামি সম্রাট আলী আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে গত জুন মাসের ২ তারিখে মহাজনপুর থেকে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গার বাজারের কাছে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে পুর্বপরিকল্পিতভাবে কাগজে সই করিয়ে নেই। এবং বলে তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেছে। তারপর আমি তাকে নিয়ে আমার বাবার বাড়ি চলে আসি। বাবার বাড়িতে সে তিন দিন যাপন করে। এসময় স্বামী স্ত্রী হিসেব আমরা শারীরিক মেলাশা করি। এরপর সে চলে যায়। প্রায় তিন মাস আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেই।
এরপর আবারো গত ১৫ আগষ্ট আমার সাথে যোগাযোগ করে। আমি তাকে নিয়ে মহাজনপুর গ্রামে আমার খালু বনমালি’র বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে রাত্রি যাপন করি। সে রাতে আমার সাথে মেলামেশা করেন। এক পর্যায়ে সে অসৎ উদ্দেশ্যে আমাকে বিবস্ত্র করে তার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। ওই দিন চলে আসলেও পরবর্তিতে চলতি মাসের ২ তারিখে প্রতিবেশীরা জানায় সম্রাট তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমার নগ্ন ভিডিও ম্যাসেঞ্জার ও ইমুর মাধ্যমে বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জার ও ইমু গ্রুপে ছড়িয়ে দিয়ে আমাকে কলঙ্কিত করেছে।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, ভিকটিমের লিখিত অভিযোগ যাচাই বাছাই করে তদন্ত করে মামলাটি নথিভূক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি সম্রাটকে গ্রেফতার করে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বাকি আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। এছাড়া ভিকটিমকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার ও যে মোবাইল ফোন থেকে ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে সেই ডিভাইচটি জব্দ করে ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।