শাকিল রেজাঃ
মেহেরপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঐতিহাসিক মুজিবনগর উপজেলার সড়ক গুলি দখলে চলে গেছে মাটিবাহী অবৈধ যান টাক্টর ট্রলির।সূর্য ওঠার সাথে সাথে শুরু হয় তাদের বিচরণ।
ট্রাক্টরের দৌরাত্বে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে এলাকবাসি। একদিকে ট্রাক্টরের ট্রলির মাটি রাস্তায় পড়ে ধুলাবালিতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে কাঁচা পাকা রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে দূর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষের নিরব ভুমিকার কারনে ট্রাক্টর ট্রলি চালক ও ইটভাটা মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকাবাসি। প্রভাবশালীদের খুঁটির জোরে এসকল ট্রাক্টর চলছে বহাল তবিয়তে।
মুজিবনগর কমপ্লেক্স থেকে মেহেরপুর প্রধান সড়ক, কেদারগন্জ বাজার হতে আটকবর সড়ক বল্লভপুর খ্রীষ্টান কবরস্থান হতে আনন্দবাস সড়ক, বল্লভপুর মুসলিম কবরস্থান হতে ভবানিপুর বাইপাস সড়ক, যতারপুর-মহাজনপুর সড়ক সহ উপজেলার প্রায় প্রত্যেক সড়কে জমদূতের মত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই সব মাটিবাহী ট্রাক্টর।
এদিকে,উপজেলার বিভিন্ন মাঠের উর্বর জমির মাটি কেটে এক শ্রেণীর মাটিখোর অসাধু মাটি ব্যাবস্যায়ী বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রী করে লাখ লাখ টাকা আয় করে হচ্ছে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতিমালা লংঘন করে এলাকার প্রভাবশালীরা নির্বিঘ্নে ফসলি উর্বর কৃষি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের নামে ব্যাপক হারে মাটি উত্তোলন করছে এ সব মাটি চলে যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায়।মাটিবাহী টাক্টর চলার কারনে ধুলোবালি উড়ে ক্ষতি পরিবেশের এজমা সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কোমল মতি শিশুরা।
জানা গেছে, চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টর এখন প্রায় প্রতিটি ইটভাটায় ইট ও মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শহর থেকে গ্রামীণ জনপদে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রাক্টর। এসকল ট্রাক্টরের বৈধ রুট পারমিট নেই। তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৫ থেকে ২০ বছরের শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক্টর অবাধে চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। এ কারনে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
পথচারীরা জানান, ট্রাক্টর চলাচলের সময় আশপাশ এলাকায় কুয়াশার মতো ট্রাক্টরের সৃষ্ট ধুলোয় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। আর ধুলোর মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করায় সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্ট রোগ আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার শিশুসহ সব বয়সের মানুষেরা।
ট্রাক্টর ট্রলি দিয়ে দুর দুরন্ত থেকে মাটি বহন করার ফলে ট্রলি থেকে মাটি রাস্তায় পড়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়ছে সড়কে চলাচলকারীরা। এছাড়া বিরামহীন চলাচলে শব্দ দুষণেও আশপাশের গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
সড়কে মাটি পরার কারনে বৃষ্টি হলে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
নষ্ট হয়ে যেতে পারে একটি মানুষের জীবন অথবা একটি পরিবারের ভবিষৎ। কে নিবে এর দায়দায়িত্ব “মাটিখোর অসাধু ব্যাবস্যায়ী, ইটভাটা মালিক, নাকি প্রশাসন” প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুস্থ রাখার সার্থে দ্রত সময়ের মধ্যে ট্রাক্টর বন্ধের দাবি করেন তারা।
মুজিবনগর থানা পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত)বলেন,দীর্ঘদিন ধরে মাটিবাহি ট্রাক্টর চলে আসছে। এটি নিয়ন্ত্রন করতে সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন। তাছাড়া এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব ইউএনও মহোদয়ের।ইউএনও মহোদয় উদ্যেগ নিলে আমরা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এগুলো নিয়ন্ত্রন করার জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজন সরকার বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে দ্রূত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।