সার্বজনীন পেনশন স্কীম-একটি রাষ্টের টেকসই উন্নয়নের অন্যতম শর্ত হলো- উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সকল নাগরিককে সম্পৃক্ত করা এবং সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। বৈষম্যহীন সামাজিক কাঠামোয় সকল নাগরিকের বিশেষ করে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪ ও ১৫ অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনয়নে প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এ লক্ষ্যে তিনি ২০০৮ সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তন করার বিষয়ে সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করাসহ ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের ঘোষণা প্রদান করেন। এর ধারাবাহিকতায় সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ প্রণীত হয় যার অধীনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ১৭ আগস্ট ২০২৩ তারিখ সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী জনকল্যাণমূখী পদক্ষেপ, যা সকল নাগরিকের অবসরকালীন আর্থিক মুক্তির সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ সর্বজনীন পেনশন স্কিম মাঠ পর্যায়ে সুষ্ঠু ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবহিতকরণ সভা করেছে মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসন এর আয়োজনে, উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আলাউদ্দিন এর সঞ্চালনায়, এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্হিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুস সাদাত রত্ন, মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজ্জ্বল কুমার দত্ত, সোনালী ব্যাংক মুজিবনগর শাখা ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলাম, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার হাসনাইন জাহিদ, বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন, মোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান , দারিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান রবিসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষিকা, মসজিদের ইমাম, গ্রাম পুলিশ এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সরকার সকল শ্রেনী পেশার মানুষের বয়স্ক কালিন নিরাপত্তার জন্য ৫ টি সর্বজনীন পেনশন স্কীম চালু করেছে সেগুলো হল-
১।প্রবাস স্কীম-(প্রবাসী) যার মাসিক চাঁদা ২০০০-১০০০০।
২।প্রগতি স্কীম-(বেসরকারী চাকুরিজীবী) যার মাসিক চাঁদা ২০০০-১০০০০।
৩।সুরক্ষা স্কীম-(সকর্মে নিয়োজিত) যার মাসিক চাঁদা ১০০০-৫০০০।
৪।সমতা স্কীম- (অতিদরিদ্র )যার মাসিক চাঁদা ৫০০
৫।প্রত্যয় স্কীম- (স্বায়িত্বশাসিত পতিষ্ঠানে কর্মরত চাকুরিজীবীদের জন্য বিশেষায়িত স্কিম) যার মাসিক চাঁদা ২০০০-১০০০০।
সার্বজনীন পেনশন স্কীমে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী যে কেও যুক্ত হতে পারবেন এবং ৬০ বছর বয়সে চাঁদা বন্ধ হয়ে প্রতি মাসে পেনশন শুরু হবে।
অবহিতকরণ সভা শেষে উপজেলা চত্বরে স্থাপিত সার্বজনীন পেনশন স্কিমের রেজিস্ট্রেশন বুথের উদ্বোধন করা হয়।