মুজিবনগর থানার গেটে ছাত্র জনতার বিজয় মিছিল দেখে দৌড়ে থানা থেকে পালিয়ে যান ওসি। এ সময় পুলিশের নিরস্ত্র সদস্যরা সহ নারী কনস্টেবলগণ হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। অনেক পরে পরিস্থিতি বুঝে আবারো থানায় ফিরে আসলে সেখানে কর্মরত পুলিশ সদস্যগন বিদ্রোহ করে বসেন এবং তার অধীনে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানান। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ সময় পুলিশ সুপার বাধ্য হন থানার ওসি পরিবর্তন করতে।
সোমবার (৫ আগষ্ট) শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবর পেয়ে সারা দেশের ন্যায় মুজিবনগরেও বিকাল ৫ টার দিকে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র জনতা। এ সময় তাদের সাথে বিএনপি ও জামায়াত কর্মীরাও যোগ দেয়। মিছিলটি মুজিবনগর থানার মূল ফটকের সামনে পৌঁছালে সেখানে দাঁড়িয়ে তারা কিছুক্ষণ উচ্চস্বরে স্লোগান দেয়। স্লোগানের শব্দে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে মুজিবনগর থানার ওসি উজ্জল কুমার দত্ত দৌড়ে প্রাচীর ও তারকাটা পার হয়ে পালিয়ে যান।
এ সময় থানায় কর্মরত পুলিশের নিরস্ত্র সদস্যরা সহ নারী কনস্টেবলগণ হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। তারা করণীয় নিয়ে মেহেরপুর পুলিশ সুপার এবং খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে যোগাযোগ করেন। পুলিশ সুপার ও রেঞ্জ ডিআইজি পলাতক ওসি উজ্জ্বল কুমার দত্তের সাথে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইফুল আলমকে মুজিবনগর থানায় পৌছে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার নির্দেশ দেন। রাত দশটার পরে থানাতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার দত্ত ফিরে আসলে তার অধীনস্থ পুলিশ সদস্যরা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন। এবং পুলিশ সুপারকে জানান এই ওসি পরিবর্তন না করলে তারা সকলে পদত্যাগ করবেন। ওসি পরিবর্তনের দাবির প্রেক্ষিতে এ সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইফুল আলমকে মুজিবনগর থানার ওসি হিসেবে বদলি করা হয়।
ঘটনাটি জানতে মুজিবনগর থানার সদ্য সাবেক ওসি উজ্জ্বল কুমার দত্তের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
নবনিযুক্ত মুজিবনগর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, ‘মেহেরপুর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে পরিস্থিতির সাময়িক সমাধানে সোমবার রাত আটটার সময় মুজিবনগর থানায় আসি। পরবর্তীতে জানতে পারি আমাকে ওসি মুজিবনগর হিসেবে পোষ্টিং করা হয়েছে।’
মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহসান মঙ্গলবার বিকালে মুজিবনগর থানার ওসি পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইন্সপেক্টর উজ্জল কুমার দত্ত আপাতত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। তার ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’