মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সের মিলনায়তনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের অনুমতি না দেওয়ায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন ঝাঁড়লেন মুক্তিযোদ্ধারা।
রবিবার সকাল দুপুরে মেহেরপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) মো: আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ, ওমেদ উদ্দীন, আমজাদ হোসেন, বেগম সালেহা, চাঁদ আলী, আব্দুস সাত্তার, আলী হোসেন, হায়দার আলী খান, জিল্লুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন।
মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ বলেন, দেশ আমাদের কাছে মায়ের মত, বাংলাদেশ আমার মা। দেশকে মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধারা খেয়ে না খেয়ে প্রাণ বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। অথচ,এই মুক্তিযোদ্ধাদের কষ্টের কথা কেউ শোনেনা। আজ আমরা আমাদের জন্য তৈরী বিল্ডিংয়ে এ সভা করতে পারছিনে। ভাড়া করা যায়গায় সভা করতে হচ্ছে। না এটা কোনো মতে সহ্য করা যাবেনা।
মুক্তিযোদ্ধা চাঁদ আলী বলেন, আমাদের জন্য সরকার একটি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরী করেছেন। অথচ, আমাদের সভা সমাবেশ সেই ভবনে নয়, করতে হচ্ছে বাইরের ভাড়া করা যায়গায়। তিনি এর তীব্র নিন্দা জানান।
মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তৈরী ভবনগুলো চালু করার জন্য। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত ভবনে সভা সমাবেশ করতে না দেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান বলেন, সর্বোচ্চ চেয়ারে বসে মুক্তিযোদ্ধাদের ভয় ভীতি দেখাবেন। আর যত ধরনের কুকাজ অকাজ করে যাবেন। মুক্তিযোদ্ধারা বসে সেটা দেখবে তা হবেনা। ডিসিকে উদ্দ্যেশ্য করে বলেন, আপনার কাছে দরখাস্ত করতে গেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। আপনী বলেন বড় ভাইয়ের সাথে সমঝোতা করে আসেন। এটা ডিসির মত কথা আপনার ? একজন অনাহত ব্যাক্তি আপনার বড় ভাই ? একজন অনাহত ব্যক্তির সাথে আপোষ করে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সভা করতে হবে ? ছি ছি ছি। এ জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের বিষ খেয়ে মরা উচিৎ।
সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টন (অব.) আব্দুল মালেক বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। তার সুযোগ্য কন্য শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের স্বর্ণ শিখরে পৌছে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা আছে বলেই মুক্তিযোদ্ধাদের উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা শেখ হাসিনার উন্নয়নকে ¤øান করে দিচ্ছেন। কিছু হালুয়া রুটি খাওয়া হাইব্রীড অনুপ্রবেশকারী এসে সব যায়গায় হালুয়া রুটি খাচ্ছেন আর মোজ মেরে বেড়াচ্ছেন। এদেরকে নিয়ে সাবধানে থাকতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে মেহেরপুরের মুক্তিযোদ্ধা শেখ সাঈদের মৃত্যুর পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অফ অনার না দেওয়ায় ক্ষোভ ও নিন্দাও জানান তিনি।
ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন এলাকার শতখানেক মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন।