আকরারুজ্জামান,গাংনী :
পরিচ্ছন্ন রেকর্ড রুম ব্যাবস্থাপনা, ই্-মিউটিশন (অনলাইন মাধ্যম) চালু,দুর্নীতিমুক্ত অফিস পরিছন্ন পরিবেশ ও কাজে স্বচ্ছতায় বদলে গেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভূমি সংক্রান্ত সেবার মান। দিন বদলের সাথে সাথে গাংনী উপজেলার ভূমি অফিসে ডিজিটাল সেবায় উপকৃত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা সুখময় সরকার বিগত ০৭/০৭/২০১৯ ইং তারিখে যোগদান করেই দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলেছেন এ অফিসে।
তিনি অফিসে বসেই সকল স্টাফদের দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার হুশিয়ারী দেন।এছাড়াও অফিসের কোন স্টাফ যেন অবেধ অর্থিক লেনদের না করতে পারে সেজন্য প্রতিটি কক্ষে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
অফিস চলাকালীন সময় সকলেই থাকেন সিসি ক্যামেরার আওতায়। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ সেবা পেতে হয়রানী না হন তাদের জন্য নির্মান করা হয়েছে একটি গোল ঘর। তবে গোল ঘরটি বেশ কয়েকমাস আগে নির্মান করা হলেও তা ব্যাবহারের অযোগ্য হয়ে পরিত্যাক্ত ছিল। সব সময়ই থাকতো তালাবদ্ধ। সুখময় সরকার সহকারি কমিশনার (ভুমি) গাংনী উপজেলায় ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পরপরই গোলঘরটি মানুষের বসার ব্যাবস্থা করেছেন।
সে গোল ঘরেই বিভিন্ন সমস্যার শুনানী হয়ে থাকে। সুময় সরকার যোগদানের দু’একদিন পরেই উন্নত ভূমি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে চালু করেছেন ই-মিউটিশন। গাংনীতে এই প্রথম ইন্টারনেটের মাধ্যমে নামজারী করা হচ্ছে। এতে খুব কম সময়ে কাজ করতে পারছেন সেবা প্রত্যাশীগণ। গাংনী উপজেলায় মোট ৯ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস রয়েছে।
যাদের মাধ্যমে জনগনকে ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রদান করছেন উপ-সহকারি কমিশনারগণ । তাদেরকেও সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন এ কর্মকর্তা।
ই-মিউটিশনের সুবিধা ভোগীরা জানান, খুবই অল্প সময়ে অল্প খরচে কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই ই-নামজারি করা হচ্ছে। ই-মিউটিশন চালু করায় সময়,অর্থ,ভোগান্তি যেমন নেই তেমন কাজের রয়েছে চরম স্বচ্ছতা।
সুখময় সরকার ইমিউটিশনে দক্ষ অফিসার হিসেবেও ক্ষ্যতি রয়েছে। এব্যাপারে নিজ উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদের ইউডিসি,ইউপি সচিব,উপসহারি ভুমি কর্মকর্তাসহ ভূমি সংক্রান্ত ব্যাক্তিদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ভূমি কর্মকর্তা সুখময় সরকার। ই-নথির কাজ চালু করা হওয়ায় সাধারনের ভোগান্তিও কমেছে। ভ’মি সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা সাহারবাটি গ্রামের মকলেসুর রহমান জানান, বর্তমানে কাজ করতে তার কোনো ভোগান্তি হচ্ছেনা। স্বল্প সময়েই তিনি নির্ভূল কাজ করতে পেরেছেন।
নওপাড়া গ্রামের জিয়ারুল ইসলাম জানান,জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা নিয়ে ভ’মি অফিসে এসেছিলাম সহজেই আমার কাজ হয়েগেছে। আমার কাছে কোনো অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হয়নি বরং আগের চেয়ে কাজের মান অনেক বেড়েছে। হাড়াভাঙ্গা গ্রামের ইদ্রিস আলী জানান,ই-নামজারির আবেদন করলাম,কাগজ পত্রের ত্রুটি না থাকলে নির্ভুল কাজ হবে। ভবিশ্যতে জমিজমা নিয়ে কোনো ভোগান্তি থাকবেনা।
গাংনী উপজেলা ভূমি অফিস সুত্রে জানা গেছে,২০১৯-২০ অর্থ বছরে ই-নামজারির জন্য আবেদন গ্রহন করা হয়েছে ৮০১ টি, এর মধ্যে মঞ্জুর হয়েছে ২১৫ টি। কাগজ পত্রের ত্রুটি থাকায় ৬৩ টি আবেদন না মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৫২৩ টি আবেদন।
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে গাংনীতে ১১৩৬ টি ই-নামজারি অনলাইন আবেদন করা হয়।
সেবার মান নির্নয়ে মেহেরপুর জেলার শীর্ষে রয়েছে গাংনী উপজেলা ভুমি অফিস। সুত্র জানায়,মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৯৪৪ টি,মুজিবনগর-৩৮৪ টি ই-নামজারির জন্য আবেদর করা হয়। বাংলাদেশের খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে গাংনী ভূমি অফিস এখন মডেল ভূমি অফিস হিসেবে পরিচিত বলে জানালেন সহকারি কমিশনার (ভুমি) সুখময় সরকার।