মামলার তদন্তে অবহেলা, তদন্ত প্রতিবেদনে অস্পস্ট ও অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় মেহেরপুর থেকে বদলিকৃত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ারকে সশরিরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের গাংনী আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, শরিয়ত উল্লাহ্ এই আদেশ প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল, গাংনী জেলা পরিষদ মার্কেট চত্তরে যুবলীগ অফিসের সামনে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এঘটনায় বিবদমান দুইপক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক মামলা দায়ের করেন। যে মামলা দুটি তদন্তের জন্য মেহেরপুর থেকে বদলিকৃত সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ারকে, নির্দেশ প্রদান করেন আদালত। মামলা দুটি ৫ মাসেরও অধিক সময় পরে প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গতকাল মঙ্গলবার উভয় মামলার প্রতিবেদন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার দাখিলকৃত প্রতিবেদন অস্পস্ট, অসঙ্গতিপূর্ণ এবং অসম্পূর্ণ বলে আদালতের পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়।
শুনানি শেষে গাংনী আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, শরিয়ত উল্লাহ্ প্রতিবেদনে উল্লিখিত অস্পস্ট ও অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয়গুলো স্পষ্টীকরণের জন্য অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে সশরিরে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
এমন গুরুত্বপুর্ন মামলায় পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার দাখিলকৃত প্রতিবেদন দৃষ্টে আদালত তার আন্তরিকতা ও উপযুক্ত সতর্কতার অভাব ছিল বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। এছাড়া প্রতিবেদন দাখিলে অযাচিত বিলম্ব ও পুলিশ কর্মকর্তার ইচ্ছাকৃত অবহেলা ছিল বলেও আদালত তার আদেশে উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে আগামি ১৫ জুন ব্যখ্যা এবং প্রতিবেদনে উল্লিখিত অস্পস্ট ও অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয়গুলো স্পষ্টীকরণের জন্য অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে সশরিরে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল, গাংনী জেলা পরিষদ মার্কেট চত্তরে যুবলীগ অফিসের সামনে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ অফিসে ঘিরে ধরে ইট পাটকেল চালালে ভিতর থেকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেন। এঘটনার পরপরই মেহেরপুর-২ আসনের এমপি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি দল মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক অবরোধ করে কিছুক্ষণ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এসময় ওসি আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনা স্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং যুবলীগ অফিস থেকে সভাপতি মোশাররফ হোসেনকে উদ্ধার করে থানায় নেন। পরে মাঝরাতে মোশাররফ হোসেনকে ছেড়ে দেন পুলিশ।
এঘটনায় উভয় গ্রুপের পক্ষ থেকে দুটি মামলা এফআইআরভূক্ত হয়। তবে, অপু সরোয়ার সাম্প্রতিক সময়ে মেহেরপুর জেলা থেকে বদলি হয়ে অন্যত্রে গেছেন।