মেহেরপুর শহরের সেই কল্লোলই আজকের খ্যাতিমান বিজ্ঞান লেখক ও সুবক্তা। খ্যাতিমান এই বিজ্ঞান লেখক শুধু এলাকার নয়, তাকে নিয়ে গর্ব করে পুরো বাংলাদেশ। শৈশব ও কৈশরে এম এ ওহাব কল্লোল ছিলেন মেহেরপুর শহরের শান্ত ও নম্র স্বভাবের একটি ছেলে। তাই তাকে সবাই আদর করতো।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যর শহর মেহেরপুরের আলো বাতাসেই বেড়ে ওঠেন তিনি। স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেনীতে উন্নীত হয়ে ভর্তি হন মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে এসএসসি এবং মেহেরপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এসসি পাশ করেন।
পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্সে এম.এসসি শেষ করেন এই কির্তিমান। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে কর্মজীবন শুরু করেন সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পরিচালক পদ থেকে অবসর নিয়ে ঢাকাতেই অবস্থান করছেন।
এম এ ওহাব কল্লোল তার কর্মময় জীবনে ব্যাস্ততম সময় পার করলেও বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখি করেছেন বেশ কিছু বই। তিনি লিখেছেন ইলেকট্রনিক্স, ইন্সট্রুমেন্টেশন এবং বায়োমেডিকেলের ওপর ৪টি টেক্সট বুক।
শিশুদের জন্য লিখেছেন বিজ্ঞানভিত্তিক ৪টি বই, এগুলো হচ্ছে-‘রোবোটের রাজ্যে’, ‘কী আছে মঙ্গলগ্রহে’, ‘সময় ও ঘড়ি’ এবং ‘বিজ্ঞানীদের ছেলেবেলা’। অফিসের কর্মব্যস্ততা থাকলেও বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক পত্রিকায় বিজ্ঞান, পরিবেশ, বায়োমেডিক্যাল ও অন্যান্য বিষয়ে তিনশো’র বেশি লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
তার লেখাগুলো শুরুই হয়েছে বিজ্ঞান বিষয়ে নিয়ে। বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক তিনি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন তার লেখালেখির মধ্য দিয়ে। এম এ ওহাব দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ বেতার ঢাকা কেন্দ্রের সাথে জড়িত। এম এ ওহাব ও বাংলাদেশ বেতার অঙ্গাঅঙ্গি জড়িত। ২০০৮ সাল থেকে তিনি বেতারের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন পান্ডুলিপি রচনা করেছেন।
শুধু রচনা করেননি, সেগুলো পাঠ করে আসছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নানা উৎসব নিয়ে তার লেখা প্রতি মঙ্গলবার সকাল ৮ঃ৩০-এ বেতারের ম্যাগাজিন দর্পণে প্রচার হয়। একই সময় শনিবার ‘ধরিত্রী কথা’ নামে বিজ্ঞানের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ও বিজ্ঞান নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
এছাড়াও বেতারের অন্যান্য অনুষ্ঠানেও তার অংশগ্রহণ রয়েছে। বিটিভিতেও মহাবিশ্বের পথে পথে অনুষ্ঠানে তিনি। বাংলাদেশ বেতারের আলোচনায় মহাকাশ ও বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। শিশুদের জন্য বিজ্ঞানের ওপর বই প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
কর্মজীবনে ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ভ্রমণ করেছেন। ঢাকাতে বসবাস করলেও মেহেরপুর ও এ অঞ্চলের মানুষের জন্য তার অগাদ ভালোবাসা রয়েছে। সুযোগ পেলেই ছুটে যান সেই শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতিবিজরিত মেহেরপুরে।