মেহেরপুরের সড়কে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। মাঝে মধ্যেই ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা। অবৈধ ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও পরিবহনে ঘটেছে এইসব দুর্ঘটনা। মেহেরপুর সদরে ২টি ও গাংনী উপজেলায় ৩টি সড়ক দুর্গটনায় প্রাণ গিয়েছে মোট ৫ জনের। সেই সাথে আহত হয়েছে কমপক্ষে অর্ধশত মানুুষ।
গত মে মাসে করোনার প্রাদুর্ভাবে অঘোষিত লকডাউন চলাকালিন সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছে ৪ জন এবং ৯ জুন মঙ্গলবার শ্যামলী পরিবহনের ধাক্কায় প্রাণ হারাই আরও এক শিশু। বেপরোয়া গতি আর অবৈধ পরিবহনের লাগামহীন চলাচলের কারনেই এইসব দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। তবে এইসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটলেও, দৃশ্যমান কোন শাস্তি পেতে দেখা যায়নি চালক বা পরিবহন মালিকদের।
১২ মে গাংনীর ফতাইপুরে ইজিবাইকের ধাক্কায় ফিরোজা খাতুন নামের এক গৃহধুর মৃত্যু হয়। একটি শিশুকে বাচাঁতে গিয়ে নিজে আর বাচতে পারেনি। অবৈধ ইজিবাইক তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পরদিন ১৩ মে অবৈধ ইজিবাইকের ধাক্কায় জাকারিয়া(০৮) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়। সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। উজলপুর গ্রামের জিয়ারুলের ছেলে জাকারিয়া রাস্তা পার হওয়ার সময় নিয়ন্ত্রনহীন ইজিবাইক তাকে ধাক্কা দেয়।
একদিন পর ১৫ মে আবারও ট্রাক্টরের নিচে পড়ে জাহিদুল ইসলাম নামের একজন প্রাণ হারায়। মেহেরপুর সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছিল।
এ ঘটনার আরও একদিন পর ১৬ মে গাংনীর তেরাইল গ্রামে সাদিক হোসেন নামের এক শিশু মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হয়। সাদিক হোসেন একই গ্রামের সম্রাট আলীর ছেলে। রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুত গতি একটি মোটরসাইকেল কেড়ে নেয় তার প্রাণ।
৯ জুন মঙ্গলবার গাংনীর আকুবপুরে শ্যামলী পরিবহনের ধাক্কায় প্রাণ হারায় খাদিজা খাতুন নামের এক শিশু।
গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান জানান, এসব দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার থেকে কোন অভিযোগ করেনি। নিহতের পরিবারের অনুরোধে ময়না তদন্ত ছাড়াই মৃতদের দাফন করা হয়। তাই পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করতে পারেনা।
সদর থানার ওসি শাহ দারা খান জানান, দুর্ঘটনা গুলোতে জিডি করেছে। কিন্তু পরে নিহতের পরিবার এবং দায়িরা নিজেরাই একটি মিমাংশা করে ফেলে। ফলে মামলা রেকর্ড হয়নি। এছাড়াও ময়না তদন্ত না করার জন্য পরিবারের অনুরোধ থাকে। এ জন্য আমরা নিজেরাও কিছু করতে পারিনা।
ট্রাফিক পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন জানান, আমরা সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। গত জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত ৫শ অবৈধ পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এছাড়াও অবৈধ পরিবহন চালকদের সাথে মার্চ মাসে ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে একটি চুক্তি সাক্ষর হয়। শর্ত অনুযায়ি এরা প্রধান সড়কে চলাচল করবে না। কিন্তু করোনা প্রাদুর্ভাবের কারনে এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তারপরও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে।