মেহেরপুরের তিনটি উপজেলার ৯০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। দেশপ্রেম, ভাষা প্রেম, নাগরিক চেতনা গড়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা একুশে ফ্রেব্রুয়ারির চেতনা থেকে দুরে থেকে যাচ্ছে।
একুশ পেরোনোর ৬৮ বছর পরেও সেই অব্যক্ত ক্ষুধা থেকেই যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের। তবে জেলা প্রশাসন থেকে আগামি বছর জেলার সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাধ্যতা মুলকভাবে শহীদ মিনার বাস্তবায়ন করার কথা জানানো হয়।
মেহেরপুর জেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে মাধ্যমিক ও কলেজ রয়েছে ১৬৮টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩০৮টি এবং কিন্ডার গার্টেন রয়েছে ১৬৯টি। সব মিলিয়ে ৬৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ জেলায়। এর মধ্যে মাত্র ৪৯টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। প্রাইভেট ও কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠান গুলোর একটিতেও নাই শহীদ মিনার।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের তিনটি উপজেলায় নিম্ম মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, কলেজে মাদ্রাসা, ভোকেশনাল ও স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে ১৬৮টি।
এর মধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় নিম্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩৯টি, কলেজ রয়েছে ৪টি, মাদ্রাসা রয়েছে ১১টি, ভোকেশনাল ১টি, স্কুল এন্ড কলেজ ৩টি। এর মধ্যে ১২টি শহীদ মিনার রয়েছে।
গাংনী উপজেলায় নিম্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫টি, কলেজ রয়েছে ৮টি, মাদ্রাসা রয়েছে ১০টি, ভোকেশনাল ১টি, স্কুল এন্ড কলেজ ৩টি। এর মধ্যে ২০টিতে শহীদ মিনার রয়েছে।
মুজিবনগর উপজেলায় নিম্ম মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৬টি, কলেজ রয়েছে ২টি, মাদ্রাসা রয়েছে ৪টি, ভোকেশনাল ১টি। এর মধ্যে ১৩টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে।
এদিকে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে তাদের চিত্র আরো করুণ। জেলার তিন উপজেলায় ৩০৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৪টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ১০৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২টিতে, গাংনীতে ১৬১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১টিতে এবং মুজিবনগর উপজেলায়৩৮টির মধ্যে ১টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে।
জেলা জাসদের সভাপতি ওমর আলী জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার না থাকা অত্যন্ত দু:খজনক ও লজ্জাস্কর। বর্তমান সরকারের দ্রুত এ দিকে নজর দেওয়া উচিত।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহা. ফজলে রহমান বলেন, ৩০৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৪টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। বিদ্যালয় গুলোতে ভবন নির্মানের প্রকল্পে শহীদ মিনার নির্মান ট্যাগ করে দিলে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মান করা সম্ভব ।
জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আমান উদ্দিন মন্ডল বলেন, জেলার এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই সেটি বোধগম্য নয়। আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি নিয়ে উর্ধতন মহলকে জানানো হবে।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গনি বলেন, শতকরা ৯০ শতাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই এটি খুবই দু:খজনক। ইতিপূর্বে বিষয়টি অনুধাবন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে জেলা পরিষদ থেকে বেশ কিছ’ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরি জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদে প্রকৌশলী না থাকায় সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে আগামি বছরের ২১ শে ফেব্রুয়ারির আগেই জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে তোলা হবে।