মেহেরপুরে বিষপানে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা করায় রেক্সোনা নামের এক নারীকে ১ বছরের কারাদণ্ড এবং আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়াতে লালমনি খাতুন নামের অপর নারীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
গতকাল সোমবার (২৮ আগষ্ট) জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ গাংনী, মেহেরপুরের বিচারক তরিকুল ইসলাম এই রায় দেন। আদালত রায়ে আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকারীকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং প্ররোচনাকারী হিসাবে তার মা লালমনি খাতুনকে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমান, অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন।
বাংলাদেশের দন্ডবিধিতে আত্মহত্যার চেষ্টাকারীর শাস্তি দণ্ডবিধির ৩০৯ ধারায় এক বছর কারাদণ্ড এবং আত্মহত্যায় সহায়তা বা প্ররোচনাকারীকে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারা অনুযায়ী ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা গ্রামের মোঃ মতিউর রহমানের ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান একই গ্রামের প্রবাসী জিয়ারুল ইসলামের স্ত্রী মোছাঃ রেক্সোনা খাতুন এবং রেক্সোনার মা আরজ আলীর স্ত্রী মোছাঃ লালমনি খাতুন এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধি ১৯৩/৩০৯/৫০৬ (II) ১০৯ ধারায় ২০২২ সালের ২৮ এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করে। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন ও তিনজন সাক্ষীর স্বাক্ষর প্রমাণ শেষে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার বাদী ও আসামিগণের বাড়ি একই গ্রামে। মামলার বাদী মোঃ মিজানুর রহমান মেসার্স মিজান গার্মেন্টস এন্ড হার্ডওয়ারের স্বত্বাধিকারী। মামলার এক নম্বর আসামি মোছাঃ রেকসানা খাতুন প্রবাসী জিয়ারুল ইসলামের স্ত্রী। প্রবাস থেকে জিয়ারুলের পাঠানো টাকা বিভিন্ন ভাবে অপব্যায় করে রেক্সোনা খাতুন। পরবর্তীতে রেক্সোনার স্বামী তার পাঠানো টাকার হিসাব চাইলে, মেসার্স মিজান গার্মেন্টস এন্ড হার্ডওয়ারের স্বত্বাধিকারী মিজানের কাছে টাকা জমা রাখার মিথ্যা গল্প সাজিয়ে ফাঁসানোর জন্য রেক্সোনা তার ফেসবুক আইডি থেকে টাকা পাবে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালায়।২০২২ সালের ২০ এপ্রিল রেক্সোনা মামলার বাদী মিজানুর রহমানের কাছে ২ লক্ষ টাকা পাবে দাবী করে তার মা লালমনি খাতুনের ইন্ধনে মিজানুর রহমানের দোকানে এসে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন রেক্সোনা খাতুন কে দ্রুত গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এসময় রেক্সোনা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে।
মিজানুর রহমান উক্ত সংবাদ প্রকাশের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবাদ দেওয়া সহ আদালতে মামলাটি দায়ের করে।