মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকার অনুমোদনহীন একটি আবাসিক হোটেল থেকে আব্দুর রহমান (৫৫) নামের একজনের গলাকাটা অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আব্দুর রহমান মেহেরপুর সদর উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তি শোলমারী গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। সে পেশায় একজন বিদ্যুৎচালিত ইজিবাইক চালক।
আজ রবিবার বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় শহরের আবাসিক হোটেল “এজাজ প্লাজা’র চতুর্থ তলার ৪০২ নং কক্ষ থেকে তার গলা কাটা অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দূর্বৃত্তরা তাকে হাত পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেছে।
নিহত আব্দুর রহমানের ভাগ্নে আনোয়ার হোসেন তার লাশ সনাক্ত করেন।
নিহতের স্ত্রী রেহানা খাতুন বলেন, গত শুক্রবার রাতে ভাত খেতে বসেছিল। এসময় তাকে কে বা কারা ফোনে ডাক দেই। সে ভাত রেখে তাদের সাথে চলে আসে। তারপর থেকে নিখোঁজ রয়েছে। আমরা তাকে খুজতে বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করি। আজকে বিভিন্ন মারফতে আমরা জানতে পারি হোটেল এজাজে একটি লাশ আছে। আমরা এসেই মরদেহ দেখেছি।
কুতুবপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য (মেম্বর) গোলাম মোর্তুজা মতু পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলেন, আমাদের এলাকার একজন ভাল মানুষ হিসেবে আব্দুর রহমান পরিচিত। তার বিরুদ্ধে কেউ কখনো কোনো অভিযোগ দেখাতে পারবেনা। শুক্রবার পার্শ্ববর্তি উজুলপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে নাহিদ হোসেন চুয়াডাঙ্গা যাওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে ডেকে নেন আব্দুর রহমানকে। তারপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন আব্দুর রহমান।
গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, হোটেল এজাজের ৪০২ নং কক্ষ থেকে অর্ধগলিত গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কেনো কি কারনে এই হত্যাকান্ড এখনি বলা সম্ভব নয়। তবে হোটেল এজাজ প্লাজার মালিক ঝন্টু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রাথমিকভাবে থানায় নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, হোটেল এজাজ প্লাজা আবাসিক হোটেল চালানোর জন্য বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। এখানে একজন ম্যানেজারও নেই। পাঁচ তলা ভবনের এই অবৈধ হোটেলটিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে সিসি ক্যামেরাও নেই। হোটেল মালিক অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ এই হোটেলটি চালিয়ে আসলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো নজরদারি রাখা হয়নি।
স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হোটেল বাজার এলাকায় একটি অটো চালকের গ্রুপ তৈরী হয়েছে। তারা অটো চালানোর আড়ালে হেরোইন বিক্রি করে আসছে। শুধু হোটেল বাজার এলাকায় নয়, ডিসি কোর্টের সামনে তাদের অবস্থান। মুজিবনগর রাস্তায় অটো চালিয়ে থাকেন। দুই তিন দিন তাদের দেখা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), সিআইডি পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেন।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে।