মেহেরপুরে করোনা প্রতিরোধ কমিটির কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন।
তিনি রবিবার রাতে মেহেরপুর প্রতিদিনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি তাঁর ফেসবুক ওয়ালেও স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যা হুবুহু প্রকাশ করা হলো।
“প্রিয় মেহেরপুরবাসী, আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি পরম করুণাময় আল্লাহর অশেষ রহমতে সুস্থ থাকলেও আমার মনে হয় করোনার প্রভাবে কিছুটা মানসিক দুর্দশাগ্রস্ত ও অস্বস্তিতে ভুগছেন।
দীর্ঘদিন পরে আজ আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি দুটি জরুরি কথা বলার জন্য। ইতিমধ্যে আপনারা অবগত হয়েছেন যে, ১৭ নভেম্বর ২০১৯ তারিখ চীনের উহান, হুবেই (Wuhan, Hubei) প্রদেশে ‘করোনা ভাইরাস’ নামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যুবরণও করেছে। তখন গোটা বিশ্ব এটাকে ততটা আমলে নেয়নি।
ঠিক এর ৭৩ দিন পর জাতি সংঘের সহযোগী সংস্থা যার প্রধান কার্যালয় জেনেভা থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ৩১ জানুয়ারি ২০২০ করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করলেন এই বলে যে, চীন ছাড়াও এই ভাইরাসটি পর্যায়ক্রমে বিশ্বের অন্যান্য দেশে সংক্রামিত হতে পারে।
২০২০ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে আমরা প্রথম করোনার প্রাদুর্ভাব দেখতে পেলাম। ১৮ মার্চ প্রথম আমরা জানতে পারলাম এই করোনা ভাইরাসে ১৪ জন সংক্রামিত হয় ও ৭০ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ মৃত্যুবরণ করে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এই ভাইরাসে ৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৫ জন। তারপর থেকে অদ্যাবধি করোনা সংক্রান্ত তথ্য অনেকেরই জানা। সরকার ২৪ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারিসহ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন। ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি’ বাদে গণপরিবহন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সমস্ত দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
এমতাবস্থায় মেহেরপুরের সাধারণ দিনমজুর, শ্রমিক থেকে শুরু করে হতদরিদ্র মানুষ খুব কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। ইতোমধ্যে সরকার এইসমস্ত মানুষের জন্য সাহায্য, সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন।
আমি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি এই দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এই কমিটিগুলোর দৃশ্যমান কোন তৎপরতা এপর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি।
যেহেতু আমি মেহেরপুর-১ এক আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলাম সেহেতু গত কয়েকদিন থেকে মেহেরপুরের দূর্দশা ও অভাবগ্রস্ত মানুষ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমার নিকট জানতে চায় কোথায় গেলে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পাবো।
তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে, আমার পার্টি রাষ্ট্র ক্ষমতায়, আমার নেত্রী মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকা সত্বেও আমি সেই সমস্ত বিপদগ্রস্ত মানুষদের কোন তথ্য ও সদুত্তর দিতে পারিনি।
আমার মনে হয় এই মহা দূর্যোগের সময় দুস্ত মানবতার সেবায় জেলা পর্যায়ের সরকারি ব্যবস্থাপনা কমিটি ও অন্যান্য পর্যায়ের কমিটিগুলোর অতি দ্রুত মাইকিং ও কেবল নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করা অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।
সবাই সুস্থ থাকুন, সচেতন থাকুন।
আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করি।”