মেহেরপুরে অনেক চা দোকানদার সরকারি ত্রাণ সুবিধা থেকে এখনো বঞ্চিত রয়েছে। চা বিক্রি করে তাদের সংসার চললেও করোনা পরিস্থিতিতে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। সরকারি নির্দেশনা মেনে চা দোকান বন্ধ রাখলেও ত্রাণ সুবিধা পাওয়ার তালিকায় তাদের নাম নেই।
মেহেরপুরে এ পর্যন্ত তালিকা ধরে ৪ হাজার ৫’শ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ২ হাজার, মুজিবনগরে হাজার ও গাংনীতে ১ হাজার ৫’শ।
এছাড়াও সদর উপজেলার রাজস্ব তহবিল থেকে মেহেরপুর সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১১’শ ৫০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। সেই সাথে ১ হাজার ৫’শ অটো চালকদের মাঝে ৩০ কেজি করে চাউল বিতরণ করা হয়।
পর্যায়ক্রমে আরও দরিদ্র পরিবারের তালিকা করে তাদের ত্রাণ সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানানো হয় জেলা প্রশাসন থেকে।
তবে যাদের সংসার চলে চায়ের কাপে এমন অনেক পরিবার এখনো পাইনি সরকারি কোন বরাদ্ধ। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সাথে সমন্বয় না করে তালিকা তৈরির ফলে এমন অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের।
এছাড়াও একই পরিবারে একাধিক ও জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়সজনদের ভিড়ে তালিকায় নাম উঠাতে পারছে না হত দরিদ্র চা দোকানদাররা। উপায় না পেয়ে প্রাসনের নজর এড়িয়ে নির্দেশনা অমান্য করে কেউ কেউ দোকান খুলে বসছে। স্বাস্থ্য ঝুকি থাকা সত্বেও মানছে না সামাজিক দূরত্ব।
এদিকে করোনা মোকাবেলায় জনসচেতনতা তৈরি ও সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসনের চলমান অভিযানে প্রায় অর্ধশত চায়ের কেটলি জব্দ করেছে সদর থানা পুলিশ।
মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড পাড়ার বাবু, ইমাদুল, বজলু, কালু জানান, আমাদের সংসার চলে চা বেচেঁ। করোনা মোকাবেলায় আমাদের চায়ের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে না।
সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের মৃত আজিজুরের ছেলে মেজবার আলী, মৃত গোলাম কবীর এর ছেলে ফিরোজ আলী, মুকলেচ, টগর আলী এছাড়াও হত দরিদ্র সাইকেল মিস্ত্রি কামাল ও সোহেল এখনো পাইনি সরকারি কোন সহায়তা।
সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের সুমন, মিজার, শহিদুল, মুরাদ ত্রাণ পাওয়ার দাবিদার হলেও তালিকায় নাম নেই। তাদের অভিযোগ আমাদের গ্রামে অনেক চায়ের দোকানদারই পেয়েছে ত্রাণ সহায়তা কিন্তু আমরা পাইনি। তালিকায় পক্ষপাতিত্ব হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন গ্রামে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ চায়ের দোকানদার এখনো ত্রাণ সুবিধা পাইনি। এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বরদের কাছে গেলেও তারা কানে নিচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেকের।
জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয় প্রাথমিক প্রথম ধাপে আমরা ৪ হাজার ৫’শ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছি। এখনো যারা পাইনি তাদেরকে দেওয়া হবে। আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা খাদ্য বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
এছাড়াও চেয়ারম্যান-মেম্বর এবং উপজেলা নির্বহী অফিসারের কাছে সরাসরি কল করলেও তাদের বাড়িতে খাদ্য পৌঁছে যাবে।