সম্প্রতি মেহেরপুর শহরে মাদক সেবী এবং লোক চক্ষুর অন্তরালে যারা মাদক নিয়ে কারবার করছে তাদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অনেকেই আবার মাদক সেবন করেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছে। এছাড়া শহরে ক্রমাগতভাবে বাড়ছে অপরাধ। বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনাসহ নানা ধরনের অপরাধ বাড়ার কারণে আইনশৃংখলার ক্রমাঅবনতি দেখা দিচ্ছে।
সবগুলো বিষয় নিয়ে আইনশৃংখলার বিষয়টি পুলিশকে ভাবিয়ে তুলেছে। এই সব ঘটনা পর্যালোচনায় দেখা যায় মাদকের অবাধ বিচরণ ও মাদক সেবির সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে নানা ধরনের অপরাধ বাড়ছে। সবদিক বিবেচনা করেই পুলিশ মাঠে নেমেছে। অভিযানের প্রথম দিনেই মেহেরপুর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ৭ জনকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মেহেরপুর শহরের হঠাৎপাড়া এলাকার মৃত তুফান আলীর ছেলে মো: হাবিব (৪০), বামনপাড় এলাকার আতিয়ার রহমানের ছেলে শাওন (২১), শহরের ক্যাশবপাড়া এলাকার সুমন মন্ডলের ছেলে মুহিক (২২), আব্দুল মতিনের ছেলে শাকিল (২১), ইসমাইল হোসেনের ছেলে জনি(২৪), নতুনপাড়া এলাকার মহসিন আলীর ছেলে লিজন(৪০), সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে শাহিন রেজা (৩২)।
গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে মাদকসেবীদের মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ডোপ টেষ্ট করানো হয়। ডোপ টেষ্টে ৭ জনের শরীরেই বিভিন্ন ধরণের মাদকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তারের তত্ববধানে তাদের ডোপ টেষ্টা করা হয়।
ডাক্তার জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন ৭ জনের শরীরে বিভিন্ন ধরণের মাদকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
মামলার বাদী সদর ফাঁড়ির এসআই (নি:) সোহরাব বলেন, ডেপ টেষ্টের মাধ্যমে আসামিদের প্রমাণ করা গেছে তারা মাদক সেবন ও ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত। তারা প্রাথমিকভাবে স্বীকারোক্তি দিয়েছে, শহরের মেটার্নিটি হাসপাতালের পিছনে মিয়ারুল ইসলাম ও ফৌজদারী পাড়া এলাকার রেনুকা নামের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাদক সংগ্রহ করেন। হাবিব শাকিল ও জনির বিরুদ্ধে ক্রয় বিক্রয়ের সহায়তার অভিযোগে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণীর ১৬/৪১ ধারায় অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে। আসামি শাওন. লিজন ও মুহিতের বিরুদ্ধে মাদক সেবনসহ মাদক ক্রয় বিক্রয় সহায়তা করার অপরাধে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণীর ২৫/৪১ ধারার অপরাধ এবং শাহিন অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয় বিক্রয় সহায়তা করার অপরাধে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণীর ১৬/২৫/৪১ ধারায় অপরাধ করেছে।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, অনেকেই মাদক সেবন ও ব্যবসার সাথে জড়িত। প্রমান না থাকায় তারা আইনের ফাক ফোকড় দিয়ে বেরিয়ে যায়। ২০১৮ সালের একটি আইনের মাধ্যমে প্রমাণ না থাকলেও ডোপ টেষ্ট করে কারোর শরীরে মাদকের উপস্থিতি পেলে তাদের আইনের আওতায় আনা যাবে।
এছাড়া যারা মাদক ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবিরা মনে করে প্রমাণ না থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা যাবেনা। তাদের জন্য এই আইন প্রয়োগ করা হবে। পুলিশের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজ থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।