গেলো এক সপ্তাহব্যাপি চৈত্রের প্রচন্ড খরতাপে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মেহেরপুরের তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই সময় ঘর থেকে বের হলেই গরমে ঘেমে-নেয়ে নাজেহাল।
তীব্র গরমে সড়কের মোড়ে, মার্কেটের সামনে, রাস্তার পাশে সারি করে দাঁড়ানো লেবু পানি, আখের রস, বেলের শরবত, ডাবসহ নানা প্রকারের ঠান্ডা পানির ভ্রাম্যমান দোকান চোখে পড়ছে।
জেলা শহর,গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা শহরগুলোতে ভ্রাম্যমাণ শরবত ও আখের রসের দোকান গুলোতে সাময়িক প্রশান্তি আর তৃষ্ণা মেটাতে ঝুঁকছেন মানুষ।
অস্বস্তিকর গরমে রাস্তার পাশের শরবত, আখের রস ও ডাবের দোকানগুলোই যেনো মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের ভরসার যায়গা।
তবে এসব খাবার এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, এসব খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
আখের রস ও শরবত বিক্রেতারা বলছেন, “তীব্র গরমে কদর বেড়েছে আখের রস, লেবুরসহ বিভিন্ন ধরনের শরবত ও ডাবের”।
গেলো এক সপ্তাহ ব্যাপি মেহেরপুর জেলায় গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হওয়ায় ফুটপাতগুলোতে হরহামেশাই ক্লান্ত পথিকদের নানান ধরণের শরবত ও জুস কিনে পান করতে দেখা যাচ্ছে।
গত শনিবার (৬ এপ্রিল) এ মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, মাঝারি তাপদাহের পর গত শনিবার (৬ এপ্রিল) তীব্র তাপদাহ শুরু হয়েছে।
গত শনিবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও গাংনী উপজেলা শহরে এলাকায় প্রচন্ড দাবদাহে পিপাসা মেটাতে শরবতের দোকানগুলোতে ভিড় করতে দেখা যায় তৃষ্ণার্ত মানুষকে। এসব এলাকার ফুটপাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি শরবতের দোকান। কোনো কোনো দোকানে বিক্রি হচ্ছে বেলের শরবত, আবার কোথাও লেবুর শরবত।
পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ডাব ও আখের রস। এছাড়াও পিপাসা নিবারণে সাধারণ মানুষকে রাস্তার পাশের দোকান থেকে বিভিন্ন কোম্পানির কোমল পানীয় ও মিনারেল ওয়াটার কিনে পান করতে দেখা গেছে।
গাংনী উপজেলা শহরের বড়বাজার এলাকার লেবুর শরবত ও আখের রসের দোকানে দেখা গেছে প্রচন্ড ভীড়।
বাসের অপেক্ষায় থাকা রহিমা খাতুন তার ছেলে আয়মানকে লেবু শরবত পান করাচ্ছেন। তিনি বলেন অস্বাস্থ্যকর জেনেও এটি পান করাতে বাধ্য হচ্ছি। কারন গরমে শিশুটির গলা শুকিয়ে গেছে।
আখের রসের দোকানে বোতল ও পলিথিন হাতে দাঁড়িয়ে আছেন, আব্দুর রহমান, সেলিনা খাতুন ও শাহাজান আলী। তারা বলেন, এই গরমে ইফতার পর আখের রস না খেলে শরীর কড়া হয়ে যাবে। তাই, আখের রস নিয়ে যাচ্ছি।
গাংনী উপজেলা শহরের বড়বাজার এলাকার শরবত বিক্রেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, যত গরম পড়বে আমাদের তত বিক্রি বাড়বে। কয়েকদিন যাবৎ গরম পড়ছে। প্রতিদিন ৬/৭ হাজার টাকার শরবত বিক্রি হয়। রোজা বের হলে বিক্রি আরো বাড়বে বলে জানান তিনি। তার শরবতে লেবু, চিনিগুলা, তুকমা দানা, ইসুপগুলের ভুশি, বরপ দিয়ে তৈরি। এর মধ্যে খারাপ কিছু নেই বলে জানান তিনি।
আখের রস বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, গরম পড়ার সাথে সাথে আমাদের বেচা বিক্রিও বেড়েছে। প্রতিদিন
৭/৮ হাজার টাকার রস বিক্রি করেন তিনি। এদিকে ডাব বিক্রেতা সাবান আলী জানান, ডাবের প্রচুর চাহিদা। এই গরমে মানুষ কাদের শরীর কড়ার হাত থেকে বাঁচতে ডাবের প্রতি ঝুঁকছেন।
এদিকে তীব্র গরমে বাড়ছে নানা রোগ বালাই। বিশেষ করে ডায়রিয়া, জ্বর, শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আগের তুলনায় বেশি।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন, এই গরমে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। পিপাসা মেটাতে ফুটপাতের শরবত,পানি পান থেকে বিরত থাকতে হবে।