মেহেরপুরের বিভিন্ন বাজার উঠতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ। পেঁয়াজের মারাত্মকভাবে দরপতন হওয়ায় চাষিদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। গেল এক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ায় তাদের মোটা অংকের টাকা লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক ও বর্গা চাষিরা। বাইরে থেকে পেঁয়াজের আমদানি না হলে লোকসানের হাত থেকে রেহায় পাবো।
জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টাকা আর ফুলকপি ও বাধাকপির গেল ১০ দিন আগেও পেঁয়াজের খুচরা বাজারে ৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেসময় চাষিরা লাভের মুখ দেখলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাষিদের মুখের হাসি বিলিন। বর্গা চাষিরা অনেকেই বড় ধাক্কা খেয়েছে পেঁয়াজের দর পতনে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসেব মতে জেলায় চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৬৬ হেক্টর পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।
কৃষি বিভাগ উন্নত মানের ফসল আবাদের লক্ষ্যে ১৩ হাজার ৪০০জন চাষীকে পেঁয়াজ চাষের জন্য প্রণোদনা প্রদান করেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকেই পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়ে পেয়াজ চাষ করেন।
পেয়াজ চাষী গাংনীর সাহারবাটির তহশিন মেম্বর জানান, তিনি গেল মৌসুমে দুই বিা জমিতে পেয়াজ চাষ করেছিলেন। পেয়াজের দাম ভাল পাওয়ায় এবার তিনি চার বিঘা জমিতে পেয়াজ আবাদ করেছেন। এক বিঘা পেয়াজ চাষে খরচ হয় অন্ততঃ৩০ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় ৫০ থেকে ৫৫ মন। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের মারাত্মকভাবে দরপতন হওয়ায় চাষের অর্ধেক খরচ উঠছে না। মোটা অংকের টাকা লোকসান গুনতে হবে।
পেঁয়াজ চাষী কালিগাংনীর মহিবুল জানান, এক কেজি পেঁয়াজ বীজ সাড়ে ৪ হাজার টাকায় কিনেছেন। জমি লীজ ও অন্যান্য খরচসহ মোট উৎপাদন ব্যায় দাড়িয়েছে ২৫ হাজার টাকা। এখন উৎপাদিত পেঁয়াজ আড়তে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকা মন। আবার চার কেজি অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে। এতে করে লীজ খরচই উঠছে না। মোটা অংকের টাকা লোকসান হবে তার। তিনি বলেন,বাইরে থেকে পেঁয়াজ না আসলে আমাদের লোকসান হবেনা।
একই কথা জানালেন পেঁয়াজ চাষি ছাতিয়ানের জামিরুল ও আবুল কামাল। তারা বলেন, বাইরের দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করলে মেহেরপুরের পেঁয়াজে জেলার চাহিদা পুরুন হবে। সেই সাথে চাষিরা পেঁয়াজের দাম পাবে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, চলীত মৌসুমে চাষিরা ব্যাপকহারে পেঁয়াজের চাষ করেছেন। তবে পেঁয়াজ ও কপির বাজারে দরপতনে অনেক চাষী লোকসানে পড়বেন।
স্থানীয় বাজার ছাড়াও বাইরে বাজার খোঁজ করা হচ্ছে। চাষীরা যাতে লোকসানে না পড়ে সে ব্যাপারে চেষ্টা করা হচ্ছে।