মেহেরপুর সদর উপজেলার শোলমারী গ্রামে এক প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের দায়ে বাবলু, হামিদুল, হাসেম আলী নামের ৩ ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, এক লক্ষ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো: রাফিজুল ইসলাম এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত বাবলু মেহেরপুর সদর উপজেলার শোলমারী গ্রামের হারেজ আলীর ছেলে, হাসেম আলী একই গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে এবং ইমাদুল তেরোরিয়া গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর শোলমারী গ্রামের মহসিন আলীর মেয়ে বিধবা প্রতিবন্ধী উলফাতুন্নেছার শারীরিক পরিবর্তন দেখে তার পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হয়।
পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে প্রতিবন্ধী উলফাতুন্নেছার জানান, একই সালের ৯ মার্চ তারিখে সহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে তাকে ধর্ষণ করে। পরে উলফাতুন্নেছার ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
এই ঘটনায় উলফাতুন্নেছার ভাই মাজিদুল বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ৩ এর ১/৩ ধারাই একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৬। তারিখ ২/১০/২০১৭ ।
পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেন এবং পরে চার্জ সীট দখল করেন। মামলায় মোট ১৮ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামীরা দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এক লক্ষ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
একই আদেশে মামলার আসামী বাবলু কর্তৃক ধর্ষিতার সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ায় ওই কন্যা সন্তানকে মাতৃকুলের কোন আত্মীয় কাছে রেখে মানুষ করতে পারবে বলে আদালত সিদ্ধান্ত দেন। ওই কন্যা সন্তান পিতা-মাতা উভয়েরই পরিচয় পরিচিত হবে বলে আদালত সিদ্ধান্ত দেন।
ওই কন্যার বিবাহ পর্যন্ত তার ভরণপোষণ রাষ্ট্র বহন করবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়। ওই কন্যা সন্তানের ভরণপোষণের প্রদেয় অর্থ সরকার আসামী বাবলুর নিকট থেকে আদায় করতে পারবে বলে জানানো হয়।
একই সাথে তার বিদ্যমান সম্পদ থেকে আদায় করা সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন সে সম্পদ থেকে তার আদায় হবে। মামলার রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজি শহীদ এবং আসামীপক্ষে অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন কৌশলী ছিলেন।
মেপ্র/ আরপি