সময় গড়ানোর সাথে সাথে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় কঠোর পদক্ষেপের দিকে যাচ্ছে মেহেরপুরের প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ। জনসচেতনা সৃষ্টির পাশাপাশি উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চলছে নানা প্রস্তুতি। জেলা পর্যায়ে ২০০ বেডের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন ও উপজেলা পর্যায়ে ১০০ বেডের কোয়ারেন্টিন প্রস্তুত করার কাজ চলছে।
সোমবার মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গনির সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি, সিভিল সার্জন ডাঃ নাসির উদ্দিন, পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম, কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা প্রশাসক জানান, মেহেরপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ভবনগুলোকে ২০০ জন কোয়ারেন্টিন করা যায় এমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অপরদিকে গাংনী উপজেলার জন্য চৌগাছা ও বাঁশবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মুজিবনগর উপজেলার জন্য মুজিবনগর আদর্শ মহিলা কলেজে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন প্রস্তুত করা হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান ভিত্তিকে ১০০ জনকে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়াও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেন ইউনিট ৫ বেড থেকে বাড়িয়ে ১৫ বেড করা হয়েছে। অপরদিকে গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫টি করে বেড সম্বলিত আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়াও হাসপাতালগুলোর অ্যাম্বুলেন্স ছাড়াও জরুরী প্রয়োজনে মেহেরপুর পৌরসভার ও ফায়ার সার্ভিসের দুটি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এদিকে জনসমাগম কমানোর জন্য ইতোমধ্যে প্রশাসন নানামুখি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি হাট বাজার ও চায়ের দোকানগুলোতে সমাগত বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ। গতকাল রোববার থেকে চায়ের দোকানের তাস, ক্যারামবোর্ড ও টিভি দেখা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়িতে থাকা ও অন্যান্য করণীয় সম্পর্কে প্রচারণা চালাচ্ছে প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। অপরদিকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার সকল পশু হাট।
জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রিয়াজুল আলম বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইনের বাইরে যদি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন প্রয়োজন হয় সেজন্য আগে থেকে আমরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করছি। এখনো পর্যন্ত জেলায় কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে যেন আমাদের না পড়তে হয় সেজন্য নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এখন প্রয়োজন শুধু সব সধরনের মানুষের সতর্ক ব্যবস্থাপনা। অপরিদকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসা প্রদানের জন্য সব রকম ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে মেহেরপুর জেলায় বর্তমানে ২৫৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে বলে দুপুরে সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন জানান।