মেহেরপুর সদর উপজেলার কলাইডাঙ্গা গ্রামে মসজিদ পাড়ায় হেকমত আলী নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশি ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে।
গত বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ব্যক্তিগত ক্রোধের বশবর্তী হয়ে ফারুক হোসেন এই অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হেকমত আলী ও তার পরিবারের লোকজন।
ঘরে আগুন দেওয়ার পর থেকে হেকমত আলীর পরিবারের লোকজন দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে। চক্রান্ত করে আবার কোন বিপদে ফেলে।
জমি জায়গা, টাকা পয়সা বা অন্যকোন বিষয়ে বিরোধ না থাকলেও শুধুমাত্র বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় ফারুক হোসেন কারণে অকারণে তুচ্ছ ঘটনায় বিবাদ সৃষ্টি করে। অনেকটা গায়ে পড়ে বিবাদ সৃষ্টি করা অভ্যাস ফারুক হোসেনের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বলেন, ফারুক একজন খারাপ প্রকৃতির মানুষ। প্রতিটি মানুষের সাথে তার বিরোধ লাগে। সে মানুষকে মানুষ মনে করে না। অনেকটা গায়ে পড়ে ঝামেলা করা তার অভ্যাস।
সে একসময় রাত বাহিনীর সাথে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলো। সেসময় সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে উঠা বসা করতো। তার নামে একাধিক মামলা হয়েছে, সে জেলও খেটেছে।
পূর্বের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রভাব খাটিয়ে সে চলাচল করে। যার কারণে এলাকার কোন মানুষ তার বিরুদ্ধে কথা বলে না। বর্তমানে ফারুক হোসেন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। ইতোপূর্বে মাদকসহ আটকও হয়েছে কয়েকবার।
এলাকার উঠতি বয়সের যুবকদের মাদকের সাথে সম্পৃক্ত করে চলছে তার মাদক ব্যবসা। সে নিজের বাড়ির ছাদে বসেই এলাকার উঠতি বয়সের ছেলেদের নিয়ে গাঁজা খাই আবার বিক্রিও করে।
এবিষয়ে হেকমত আলী বলেন, তার সাথে আমার জমিজায়গা বা টাকা পয়সা বা অন্য কোন ধরনের বিবাদ নেই। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রতিনিয়ত গালমন্দ খেতে হয়। হামলা মামলার হুমকি শুনতে হয়। তার এমন আচরণের কারণে আমরা অতিষ্ট।
মাসখানেক আগে আমার স্ত্রী বাড়ির সীমানায় কঞ্চির বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে ফারুকের সাথে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি বারাদী পুলিশ ক্যাম্পকে জানালে তারা এসে মিমাংসা করে দেয়। তার কিছুদিন পর ফারুক আমার ও আমার ছেলে নিশানের নামে মামলা করে।
মামলায় আমার ছেলেকে প্রধান আসামি করা হয়। পরে পুলিশ আমাকে আটক করে। প্রথমে আমি ও পরে আমার ছেলে কোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত হই। আমার ছেলেকে জামিন করে নিয়ে আসার দিবাগত রাতে আমার ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমরা রাতে শুয়ে ছিলাম।
রাত ঠিক পৌনে একটার সময় মানুষের পায়ের আওয়াজ শুনি। ঘর থেকে বের হতেই দেখি পাশের ঘরে আগুন জ্বলছে। এসময় একজনকে পালিয়ে যেতেও দেখি। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নেভায়।
একদিকে আগুন অন্যদিকে মানুষ পালিয়ে যাওয়াতে বোঝা যায় আমার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। যখন বুঝতে পেরেছে মামলা দিয়ে কিছু করা যায়নি তখন ষড়যন্ত্র করে ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ফারুক প্রতিনিয়ত আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি পরিবার নিয়ে চিন্তায় আছি। আবার কখন যেন কি ক্ষতি করে বসে।
এবিষয়ে ফারুক হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।