মেহেরপুর জেলায় আশংকাজনক ভাবে বেড়ে গেছে ডেঙ্গু রোগী। সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা থাকলেও কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রোধ করতে এখন চিকিৎসকরা ডেঙ্গু রোগীদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন।
সিভিল সার্জন মেহেরপুরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে বললেও গত ১৬ দিনে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডেই ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ জন রোগী এবং বর্তমানে ভর্তি আছেন ৫ জন।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও মোখলেসুর রহমান পলাশ জানিয়েছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতির যদি আরও অবনতি হয় সেখেত্রেও পরিস্থিতি মোকাবেলায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে।
সোমবার ২৪ জুলায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, ডেঙ্গু ওয়ার্ডে বর্তমানে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন আমদহ গ্রামের মুকুল, মেহেরপুর বড় বাজারের বিশাল দত্ত , তাতি পাড়ার খন্দকার মনিরুল, জুগিন্দা গ্রামের নজরুল ইসলাম এবং গাংনী উপজেলার বাওটের কমল হোসেনের ছেলে হামজা। চিকিৎসা নিয়ে রোগীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও এক রোগীর স্বজন জানান, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ মেডিসিন যুক্ত সাদা মশারী তাদের দেওয়া হয়নি।
জেলাতে এই বছরে এখন পর্যন্ত মোট কতজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। শুক্র ও শনিবার মেহেরপুরে অনেক অতিথি চিকিৎসক যত্রতত্র প্রাইভেট চেম্বারে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন, তারা যে সকল ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেন সে তথ্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ পর্যন্ত পৌছায় না। এজন্য বিশেষজ্ঞরা আহবান জানিয়েছেন রোগী চিকিৎসা যেখানেই করুক না কেন, ডেঙ্গু পজিটিভ হলেই যেন নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে অবহিত করে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন,’ সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে একটি ডেঙ্গু কর্নার ও একটি ডেঙ্গু ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। প্রয়োজনে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। হাসপাতালে যেকোনো জ্বরের রোগী আসলেই তাদের আগে ডেঙ্গু কর্ণারে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। পরে জরুরি বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে। মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুর সকল পরীক্ষা সরকার নির্ধারিত সুলভ মুল্যে করা হচ্ছে।‘
তবে তিনি ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় মেহেরপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের ভুমিকাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন, বিশেষ করে মেহেরপুর পৌর কর্তৃপক্ষের মশকনিধন কার্যক্রম না থাকায়।
মেহেরপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান রিটন বলেন, মশক নিধন অভিযান শুরু করা হয়েছে। আজ (আগামীকাল) মঙ্গলবার থেকে আরো জোরদার করা হবে এবং সচেতনতার জন্য বিশেষ প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
সিভিল সার্জন জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী বলেন,’ রাজধানী সহ সারা দেশের ৬৪ টি জেলাতেই থাবা পড়েছে ডেঙ্গুর। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিগত বছরগুলো তুলনায় এবার অনেক বেশি। প্রতিদিন সারাদেশেই বাড়ছে এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। তবে এখন পর্যন্ত মেহেরপুর জেলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামগ্রিকভাবে ভালো।‘