মেহেরপুর সদর উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের রোকনুজ্জামান ও হাসানুজ্জামান দুই চাচাতো ভাইকে হত্যা করা হয় বিল ও স্থানীয় নেতৃত্বের বিরোধের জের ধরে। এই হত্যাকান্ড ঘটাতে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে খুনি ভাড়া করা হয়। এই খুনের নির্দেশ দাতা হচ্ছে বর্তমানে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কারাগারে আটক আসামী আব্দুল হামিদ। মেহেরপুর জেলা পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং এ একথা বলেন।
বুধবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় পুলিশ সুপার মুরাদ আলী আরও বলেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১১-১২টার দিকে মেহেরপুর সদরের দরবেশপুর গ্রামের পূর্বপাড়া সাকিনস্থ আজিজুল হকের ধানক্ষেত থেকে ইদ্রিস আলী বিশ্বাসের ছেলে রোকনুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদের ছেলে হাসানুজ্জামান দ্বয়ের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশের নিরলস পরিশ্রমের পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে আব্দুল হাকিম, আব্দুস সালাম, তারাচাদ ফকির ও দরবেশপুর গ্রামের মামলত মন্ডল নামের চার আসামীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদের মধ্যে আব্দুল হাকিম আদালতে স্বীকার করে যে, তার আপন বড় ভাই আব্দুল হামিদ(যাবজ্জীবন সাযা প্রাপ্ত আসামী) এর নির্দেশে হামিদের ছেলে মোক্তার হোসেন হত্যা ও শোলমারী বিলের অংশদারীত্ব হতে বাদ পড়া এবং স্থানীয় নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দলের প্রদিশোধ স্বরুপ উক্ত হামিদ জেলখানা হতে রোকন ও হাসানকে হত্যার জন্য তার ভাই হাকিমকে নির্দেশ দেয়। পরবর্তিতে হাকিমের নির্দেশনা মোতাবেক ঘটনার পূর্বে তার আপন ভাগ্নে ইসমাইল হোসেন বাক্কাকে নগদ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে খুনি ভাড়া করে হত্যাকান্ডটি ঘটায়।
এই হত্যা মিশনে জড়িত সন্দিগ্ধ আসামী আবুল কালাম কালুকে ৮ অক্টোবর বারাদি বাজার থেকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসা বাদ করা হয়। এতে সে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
তার স্বীকারোক্তিতে গত ১২ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে গাংনী থানার হাটবোয়ালীয়া রোড থেকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে রনি আলী গ্রেফতার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকান্ডের সাথে জড়ত থাকার কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ননা দেয়। সে বলে, বাক্কা সহ অন্য আর একজন আসামী রোকনকে কোপাতে থাকে। পরবর্তিতে বাক্কা ও আরএকজন আসামী রোকনের পা চেপে ধরে। রনির স্বীকারোক্তিতে গত ১৪ অক্টোবর মুজিবনগর কেদারগঞ্জ থেকে ফরিদ নামের আরও একজন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ইসমাইল হোসেন বাক্কা গত ৪ অক্টোবর অজ্ঞাগ সন্ত্রাসীদের বন্দুক যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হস একাধিক মামলা বিচারাধিন ছিল।
এসময় পুলিশ সুপার বলেন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জোর অভিযান চলছে। তদন্ত স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
নিজস্ব প্রতিনিধি: