মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে সন্ত্রাস বিরোধী দমণ আইনে দায়ের করা মামলায় মেহেরপুর পৌর সভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল আশরাফ রাজীবকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে মেহেরপুর শহরের মল্লিকপাড়ায় পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নুরুল আশরাফ রাজীব শহরের মল্লিকপাড়া এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে ও মেহেরপুর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ মেসবাহ উদ্দীন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নুরুল ইসলাম রাজিব বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীর উপর হামলার অপরাধে দায়ের করা জিআর ২৬৩/২৫ নং মামলার এজাহার নামীয় ৩৮ নং আসামি। মেহেরপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত জামান বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ও জেলা জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের আদালতে মামলার আবেদন করলে। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে সদর থানাকে এজাহার নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন।
মামলায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮ জনের নাম উল্লেখ করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয় ১০০ জনকে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সৈয়দ মোনালিসা ইসলাম, মন্ত্রীর ভগ্নিপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও মন্ত্রীর ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল, সদর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রীর নিকট আত্মীয় মোমিনুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুস সালাম বাঁধন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহফুজুর রহমান, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম, যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট মেহেরপুর পৌর শহরে একটি সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে পরদিন ৫ আগস্ট মিছিল সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সরফরাজ হোসেনের নির্দেশে শহরের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনে যোগ দেওয়া শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে লাঠিপেটা করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
পরদিন দুপুরে ছাত্র-জনতা এক দফা দাবি নিয়ে মাঠে নামলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা করেন। এতে চারজন শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন আহত হন। মামলায় সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তার ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল, ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, মন্ত্রীর বোন শামীম আরা হিরাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ও পুলিশ।
এই মামলায় সম্প্রতি ফরহাদ হোসেনকে দুই দিনের রিমান্ড নিয়েছে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে। এছাড়া মন্ত্রীর স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম পলাতক রয়েছে।