বৈশ্বিক করোনা মহামারি সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, ভাল ব্যবহার ও পৌর এলাকার উন্নয়নকে গুরত্ব দিয়ে এবারের পৌর মেয়র নির্বাচিত করবেন ভোটাররা। একই সঙ্গে বর্তমান মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটনের ৫ বছরের সময়কাল এবং সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতুর ২৩ বছরের তুলনামুলক উন্নয়নের চুল চেরা বিচার বিশ্লেষন করেও ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা। মেহেরপুর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডেও সাধারণ ভোটারদেও সাথে কথা বলে এ ধরণের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে বর্তমান মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন এগিয়ে রয়েছেন সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতুর চেয়ে। তবে ১৫ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে বিজয়ের শেষ হাসিটা কে হাসবেন তা দেখার জন্য। তবে দুজন প্রার্থীই বিজয় নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ভোটাররা জানান, কথার ফুলঝুরি আর উন্নয়নের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে যারা আবারও ভোট চাইতে আসছেন, এসব প্রার্থীরা আমাদের বিপদের সময় কোথায় ছিলেন ? এবার আমরাও তাদের পাশে দাঁড়াবো, যারা আমাদের বিপদে পাশে ছিলেন।
মেহেরপুর পৌর সভার ভোটারদের একটি বিরাট অংশ সনাতন ধর্মালম্বী হিন্দুদের। এছাড়া শহরে রয়েছে প্রচুর ভাসমান ভোটার। ভোটারের অর্ধেকের বেশি রয়েছে নারী ভোটার।
মাহফুজুর রহমানের রিটনের ভোট ব্যাংকের মধ্যে বড় অংশ রয়েছে নারী ভোটার। যারা বিভিন্ন সময় তার কাছে থেকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা পেয়েছেন।
২নং ওয়ার্ড শহরের হালদারপাড়া এলাকার ভোটার নাইম রহমান জানান, করোণাকালিন সময়ে সবাই যখন দিশেহারা। মানুষের ঘরে খাবার ছিলনা। সবাই নিজেদের নিয়ে ব্যাস্ত,তখন মেয়র মাহফুজুর রহমন রিটন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে খাবার পানিসহ অন্যান্য জিনিস পৌছে দিয়েছেন। একই ওয়ার্ডের শ্যামল কুমার জানান, মানুষ আতংকিত হয়ে যখন কেউ কারোর সাথে কথা বলা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন তখন রিটন আমাদের পাশে দাড়িয়েছেন। যারা আজ কথার ফুলঝুরি আওড়াচ্ছেন তারা করোণার সময় কোথায় ছিলেন, প্রশ্ন করেন তিনি। নারী ভোটার সুফিয়া আক্তার ও রাবিয়া খাতুন জানালেন, মাহফুজুর রহমান রিটন নরম মনের একজন মানুষ। তার আচার আচারণ শান্ত। এবার তাকেই ভোট দেবো।
ওয়াপদা রোডের রহমান আলী ও সমসের মিয়া জানান, মেহেরপুর শহরকে আধুনিক শহর হিসেবে উন্নয়নই করেছেন মতু। রিটন সে তুলনায় তেমন উন্নয়ন করতে পারেননি।
বেড়পাড়া এলাকার এবার নতুন ভোটার বিথি ও মেরিনা জানান, আমরা এবছর প্রথম ভোটার হয়েছি। তাছাড়া ইভিএমে ভোট দেবো। আমরা এমন একজন প্রার্থী বেছে নেবো যে আমাদের যুব সমাজ ও নারী সমাজের উন্নয়নে কাজ করবে। নারীদের উন্নয়নের যে কথা বলেছেন, আমরা নতুন ভোটার হিসেবে যোগ্য প্রার্থীকেই বেঁচে নেবো আমরা।
আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী মাহফুজুর রহমান রিটন বলেছেন, আমি বিগত সময়ে পৌরবাসির সুখে দুখে পাশে ছিলাম। বিশেষ করে করোনাকালিন সময়ে আমি চেষ্টা করেছি তাদের বাড়ি বাড়ি নিজে গিয়ে খাবার পৌছে দিয়েছি। এছাড়া এলাকার রাস্তা ঘট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করেছি। এছাড়া বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা বৃদ্ধিসহ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। আমি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেছি। ভোট চেয়েছি তাদের কাছে। আমি সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এছাড়া আমার দলীয় নেতা কর্মীরাও আমাকে ব্যাপক সাড়া দিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, যে মামলা করে ভোটের অধিকার হরণ করেন। আর যাই পৌরবাসী তাকে আর মেয়র হিসেবে চায় না। তাই পৌরবাসীর প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। পুনরায় তারা আমাকে বিজয়ী করবেন।
এপ্রসঙ্গে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু বলেন, আমি ২৩ বছরে যে উন্নয়ন করেছি তার রিটন তার কিছুই করেনি। রিটন করোনার সময় সরকারি ত্রাণ বিতরণ করেছেন, আমি ওই সময়ে বাড়িতে থেকে ব্যক্তিগতভাবে ত্রাণ বিতরণ করেছি। বিগত ২৩ বছরের উন্নয়নের কারণেই ভোটাররা আবার আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।