মেহেরপুর সদর উপজেলার সুবিদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও আত্মীয়করণ করার অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মচারি নিয়োগে বাণিজ্যকরণ ও আত্মীয়করণ বন্ধের দাবীতে সুবিদপুর গ্রামের একরামুল হক নামের এক ব্যক্তি মেহেরপুর সদর উপজেলা মাধ্যমি শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
একরামুল হক তার লিখিত অভিযোগে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আপন চাচাত ভাই। তারা দুজন পরস্পর যোগসাজসে বিদ্যালয়ে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক, একজন ল্যাব সহকারী, একজন নিরাপত্তা সহকারী ও একজন পরিচ্ছন কর্মী নিয়োগ নিয়ে শুরু করেছেন নিয়োগ বাণিজ্য। এসব নিয়োগে প্রধান শিক্ষক তার স্ত্রী ও সভাপতির নিকট আত্মীয়সহ প্রতিবেশীদের নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তারা নিজস্ব প্রার্থী ও তাদের সাজানো প্রতিযোগীদের ঠিক করে রেখেছেন বলে জানা গেছে।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুবিদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেবেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলামের স্ত্রী জেসমিন নাহার ডলিকে। এছাড়া ল্যাব এ্যসিসটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আরিফুল হকের ভাইস্তি সবুজ আহম্মেদকে। পিন্টু নামের অপর একজনকে তার পরীক্ষার একজন প্রতিযোগী হিসেবে রেখেছেন। পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে ওই গ্রামের মশাইয়ের স্ত্রীকে পরীক্ষার প্রতিযোগী হিসেবে রেখেছেন শাজাহানের স্ত্রী বাসেনা খাতুনকে।
লিখিত অভিযোগে একরামুল হক আরো বলেন, ৪টি পদে লোক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া করলেও নোটিশ বোর্ড বা বাইরে কোনো যায়গায় নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেননি প্রধান শিক্ষক ও স্কুল কমিটির সভাপতি। কোন পত্রিকাতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন এব্যাপারেও কোনো কিছু জানেনা স্থানীয়রা। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠণ নিয়েও রয়েছে নানা বিতর্ক। তারা একে অপরে চাচাত ভাই হওয়ার কারণে, দুর্নীতি ও লুটপাট সহজেই করে পার পেয়ে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক ও ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতির।
সুবিদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনুরোধে বিদ্যালয়ে মিটিং করে ৪ টি পদের জন্য একটি স্থানীয় ও একটি জাতীয় দৈনিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকেই আবেদন করেছেন। আমি সেই আবেদনপত্রগুলি প্রধান শিক্ষককে এন্ট্রি করে রাখতে বলেছি। বিধিমোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। আত্মীয়করণ বলতে তিনি বলেন, যোগ্য কোনো লোক থাকলে সে তো আবেদন করতেই পারে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আমার স্ত্রী সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করেছেন। সরকারি বিধি মোতাবেক পরীক্ষা নেওয়া হবে। যারা টিকবে তাদেরকেই নিয়োগ দেয়া হবে।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অনোয়ার হোসেন বলেন, আমি যতদুর জানি সুবিদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এখনো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এসংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে অভিযোগের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।