গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের মাংস বিক্রেতা সুমন হত্যা মামলায় ঘাতক আব্দুল আওয়ালকে ৮ বছর কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস।
দন্ডিত আব্দুল আওয়াল গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের খন্দকারপাড়া এলাকার আবুল কাসেম ওরফে খুশি মন্ডলের ছেলে।
আজ মঙ্গলবার (২ মে) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এই রায় প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৫ জুন বেলা আড়াইটার দিকে নিহত সুমন ব্যবসায়ীক কাজ সেরে বাইসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় আব্দুল আওয়াল তাকে দাঁড়াতে বলেন। দাঁড়ানোর সাথে সাথে তাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও ঘাড়ের উপর দুটি আঘাত করে আওয়াল। এতে গুরুতর আহত হন সুমন। স্থানীয়রা আহত সুমনকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বামন্দীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেন। সেখান থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে রেফার্ড করেন।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এঘটনায় নিহতের পিতা শমসের আলী বাদী হয়ে গাংনী থানায় ৩৪১/৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা করেন। যার গাংনী থানার মামলা নং ১২, ১৫/০৬/২০১৫ইং, ধারা ১৪৩/৩৪১/৩২৬/৩০৭/১১৪ দ:বি:। সেসন মামলা (দায়রা) নং ২০০/১৭, জি আর কেস নং ১৮৪ /১৫, মামলার তদন্তকারি অফিসার গাংনী থানার উপপদির্শক (এসআই) মুক্তার আলী দীর্ঘ তদন্ত করার পর আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন। মামলাটি ৩৪১/৩০৪ ধারায় অন্তর্ভুক্তি করা হয়। মামলায় মোট ১৪ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামি আব্দুল আউয়াল দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ৮ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন।
মামলায় ৩৪১ ধারায় আব্দুল আওয়াল কে এক মাসের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক এবং আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম কৌশলী ছিলেন।
তবে, মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী আবুল কাশেম বলেন, এই রায় আমি মানিনা। রায়ের বিরুদ্ধে আমি উচ্ছ আদালতে অ্যাপিল করবো। দিনে দুপুরে আমার ছেলে সবার সামনে হাতুড়ি পেটা করে হত্যা করলো। সবাই স্বাক্ষী দিলো। অথচ, এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় মাত্র ৮ বছরের কারাদন্ড দিলো। এই রায় আমি মানতে পারছিনা।
আসামি পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট একেএম শফিকুল আলম বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে আদালত ন্যায় বিচার করেছে। আমরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি।