চলতি মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে রোজাদার, দিন মজুর ও শ্রমিকরা পড়েছে বিপাকে। প্রচন্ড গরমে শুধু মানুষ নয়, প্রাণীকুলেও শুরু হয়েছে হাঁসফাঁস।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকাল তিনটায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ৫৫%। এর আগে বেলা ১২ টার সময় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাতাসের আদ্রতা ছিল ৫৯%।
আজ বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে গরমের অস্বস্তি বেড়ে গেছে বলে জানান, চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। মুলত সোমবার (১ এপ্রিল) থেকে আবহাওয়া হরম হতে শুরু করে।
ঐদিন বিকেল ৩টায় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। যা চলতি মৌসুমে এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এদিকে আবহাওয়া প্রচণ্ড গরম হওয়ায়, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রোজাদাররা বাড়ির বাইরে বেরহচ্ছেন না। রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা অস্থির হয়ে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ।।
মেহেরপুর শহরের রিকসা চালক আয়ূব আলী জানান, তিন/ চারদিন বিভৎস হরম পড়ছে। দুপুর থেকে ভাড়া মারতে পারছিনা। রোদ আর গরমের কারনে যাত্রীও ঠিকমত পাওয়া যাচ্ছেনা ।
শোলমারি গ্রামের রিকসা চালক হারান মন্ডল বলেন, দুপুর হলেই শরীরে ক্লান্তি চলে আসছে। ইচ্ছে থাকলেও ভাড়া মারতে পারছিনা। বিকেলের আগেই বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। এমন গরম পড়লে রোজা রেখে ভ্যান চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
গাংনীর মালশাদহ গ্রামের কৃষক আজিবার রহমান বলেন, মাঠে বেরো ধানের সেচ চলছে। রোদের কারণে গরমে বেশিক্ষণ মাঠে থাকা যাচ্ছে না। অনেক রোজাদার কৃষক মাঠে কাজ করছেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই বাড়ি চলে যাচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, আজ শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রির ঘরে উঠতে পারে বলেও জানান তিনি।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার পরামর্শ দিয়ে বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রোজাদারদের সন্ধ্যার পর থেকে বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। শিশু, কিশোর ও যারা রোজা থাকতে পরছেন না তাদেরকে ঘন ঘন পানি ও শরবত পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।