মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডের রেড জোনে ভর্তি থাকা করোনা রোগীদের সংস্পর্শে থাকা স্বজনদের অবাধে চলাফেরা লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের রেড জোনে করোনা রোগীর স্বজনদের ভীড়। অনেকেই রোগীদের স্পর্শ করছেন, পাশে বসে আছেন আবার অনেকে একত্রিত হয়ে দাড়িয়ে আছেন। তাদের মধ্েয নেই কোন শারীরিক দুরুত্ব। হাসপাতালে থাকা রোগীদের সংস্পর্শে আসছেন তাঁদের সকলেই। বিভিন্ন অজুহাতে তাঁরা যখন-তখন রোগীর কাছে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করছেন না। পাশে বসে রোগীর সাথে কথা বলছেন।
আবার যখন-তখন চিকিৎসক ও নার্সদের কক্ষে ঢুকে পড়ছেন। এতে করে ওই ব্যক্তিদের মাধ্যমে হাসপাতালের অন্য রোগী, তাঁদের স্বজনেরা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শরীরে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এছাড়াও হাসপাতালের বহিঃবিভাগে করোনার নমুনা পরীক্ষা করতে আসা মানুষগুলো আর সাধারণ রোগীদের কাছে ও যেখানে সেখানে বসে থাকছেন। এদিকে মেহেরপুরে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন করে আরও ৮১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় ২৫ জন, গাংনীতে ৩৯ জন এবং মুজিবনগরে ১৭ জন। এনিয়ে বর্তমানে মেহেরপুর জেলায় করোনা পজেটিভ এর সংখ্যা ৪৮৫ জন। তার মধ্যে সদরে ১৯১ জন, গাংনীতে ১৯৬ জন এবং মুজিবনগরে ৯৮ জন। এ পর্যন্ত মেহেরপুরে মারা গেছেন ৪৬ জন।
এবিষয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মকলেছুর রহমান জানান, আমরা রোগী ও তাদের স্বজনদের বলি কিন্তু কে শোনে কার কথা। একজন মুমূর্ষ রোগী বা তার স্বজনদের সাথে তো বাকবিতন্ডা করা যায় না। ওখানে আমাদের নার্স আছে, ওয়ার্ডবয় আছে, তারা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে কিন্তু পেরে ওঠেনা। করোনার শুরু থেকেই আমরা এখানে একজন পুলিশ অথবা আনসার সদস্য চেয়েছিলাম কিন্তু আজও পাইনি। এব্যাপারে আমরা সবসময়ই সক্রিয় আছি। আসলে সংশ্লিষ্ট সকলে সচেতন না হলে তো হয় না। আমরা মাস্কই পরাতে পারলাম না সাধারণ মানুষকে।
হাসপাতালেই কয়জনের মুখে মাস্ক থাকে বলেন, অথচ সকলেই জানে এখানে করোনা আক্রান্ত রোগী আছে, রোগী আসছে, কেউ ভালো হচ্ছে আবার কেউ কেউ মারাও যাচ্ছে। আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে সাধারণ মানুষের কাছে হেরে যাচ্ছি। মানুষ জানে হাসপাতালে করোনা রোগী আছে, অনেকে করোনা রোগীদের কষ্ট দেখছে। এরপরেও মানুষ যদি সচেতন না হয়, তাহলে কিভাবে সচেতন করা যাবে। আমরা মানুষের আচার-আচরণ দেখে খুবই হতাশ।