মেহেরপুর বিসিক শিল্প নগরীতে অফিস প্রধান কর্তৃক ৩ উদ্যোক্তাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। বিসিক শিল্প নগরিতে করোনা প্যাকেজের লোনের আবদেনের বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে যেয়ে লাঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন উদ্যোক্তারা।
লাঞ্চিত উদ্যোক্তারা হলেন, মেহেরপুর স্কয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক সপের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাবু, ভাই ভাই স্টিল গ্যালারির মোঃ ফিরোজ ও ফারুক ইঞ্জিনিয়ারিং এর পরিচালক ফারুক হোসেনকে। সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে বিসিক শিল্প নাগরিতে এ ঘটনা ঘটে।
শিল্প উদ্যোক্তা স্কয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক সপের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাবু বলেন, করোনাকালিন সরকারের শিল্প উদ্যোক্তাদের বিসিকের মাধ্যমে বিশেষ ঋণ দেওয়া চালু রয়েছে। সেই ঋণের আবেদনের বিষয়ে আমি সহ ৪ জন উদ্যোক্তা খোঁজ নিতে গেলে আমাদের এখানকার কর্মকর্তারা রাগান্বিত হয়ে ওঠেন। পরে কর্মকর্তা সহ অন্যান্যরা আমাদের ধাক্কা মেরে অফিস থেকে নামিয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, অফিস খরচ বলে গত দুই মাস আগে আমার সাথে তিনি দুই হাজার টাকা নেন। তখন তিনি বলেন ৭ দিনের মধ্যে আপনার ফাইল রেডি করে আপনাকে লোন দেওয়া হবে কিন্তু আজ পর্যন্ত আমাকে লোন দেওয়া হয়নি। লোনের আবেদন করার পর থেকে, লোন আজ হবে, কাল হবে বলে তিনি হয়রানি করছেন।
তিনি বলেন করোনাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনার যে টাকা এসেছিল তখন আমি আবেদন করি। এসময় বলা হয়েছিল প্রথমেই আমাকে টাকাটা দেওয়া হবে। এই টাকা এসেছে অক্টোবর মাসে। কিন্তু অক্টোবর মাস থেকে আমাকে এযাবৎকাল ঘোরানো হচ্ছে। তারা বলছে আপনার কারখানা পরিদর্শন করবো তারপরে টাকা দেবো। কিন্তু এই সাত মাস ধরে কারখানা আর পরিদর্শন হয় না। আজকে এসে আমি যখন বলি কারখানা পরিদর্শনের নামে আমাকে ঘোরাতে পারেন না, আমাকে এভাবে ঘোরায়েন না। একথা বলায় দু এক কথায় আমাকে অফিসের কর্মকর্তা আশানুজ্জামান সহ অন্যান্য স্টাফরা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সিড়িতে ফেলে দেয়।
চাঁদবিল কলার মোড় এলাকার ভাই ভাই ষ্টিল গ্যালারীর পরিচালক ফিরোজ আলী বলেন, গত সাত মাস আগে লোনের জন্য আবেদন করেছি কিন্তু লোন পাইনি। আবেদন জমা নেওয়ার কোন রশিদ দেয়নি। এবিষয়ে অফিস থেকে কোন তথ্য জানতে চাইলে হয়রানি হতে হয়। একই অভিযোগ করেন ফারুক ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এর পরিচালক ফারুক হোসেন ও রিমন বাবু।
এসময় ঘটনাস্থলে মেহেরপুর জেলা তাঁতী লীগের সহ সভাপতি মালেকুল ইসলাম টিটোন এসে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য নিতে সাংবাদিকদের বাধা প্রদান করেন। টিটোন বলেন, এটা একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান কে ঢুকবে না ঢুকবে আমি দেখবো। আর সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকরা ঢুকলে তাদেরও দেখে নেওয়া হবে। এসময় এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান জনিকে লাঞ্চিত করেন তিনি।
মেহেরপুর জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি নুর ইসলাম সুবাদ মুঠোফোনে বলেন, বিসিকে সে কেন যাবে? এভাবে তাঁতী লীগের পরিচয় দিয়ে যেখানে সেখানে হুমকী ধামকি দেবে এটা ঠিক না। বিষয়টা আমরা দেখছি। তবে এটা নিয়ে নিউজ করেন না।
মেহেরপুর বিসিকের উপ ব্যবস্থাপক মো: আশানুজ্জামান বলেন, কাকে ঋণ দেবো আর না দেবো সেটা আমাদের বিষয়। এ বিষয়ে আমরা জবাব দিতে বাধ্য নয়। তা ছাড়া মেহেরপুর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক লিখন আমার আত্মীয়। তিনি আরো বলেন, আবুল কালাম আমাদের হুমকী ধামকি দিলে তাকে আমাদের কর্মচারীরা ঘাড় ধরে বের করে দেন। আর টিটোন আমাদের কর্মকর্তা আসাদুলের আত্মীয়। তার ডাকে সে এসেছে।