চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ কর্তৃক ০৩ (তিন) টি চোরাই মোটরসাইকেল ও চোরাই কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে ও চোর চক্রের মূল হোতাসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার মামলার বাদী আব্দুল ওয়াকিল (২৪), পিতা- মোঃ সাইফুল ইসলাম, মাতা- মোছাঃ মনিরা খাতুন, সাং- থানা কাউন্সিলপাড়া, থানা-চুয়াডাঙ্গা সদর, জেলা-চুয়াডাঙ্গা উল্লেখ করে যে, তার নিজ নামীয় কালো-লাল রংয়ের পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল গত ২৬শে মার্চ বিকাল সাড়ে চারটার সময় অজ্ঞাতনামা চোর চুরি করে নিয়ে যায়।
বর্নিত ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, অজ্ঞাতনামা দুই জন চোর একটি লাল-কালো রংয়ের পালসার মোটরসাইকেল করে গলির মুখে এসে দাঁড়ায়। তাদের মধ্য থেকে একজন হেলমেট মাথায় হাফ হাতা নেভি ব্লু রংয়ের গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় বাদীর মোটরসাইকেলের কাছে এসে তালা ভেঙ্গে মোটরসাইকেলটি চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে গত তিন এপ্রিল তারিখে বাদী আব্দুল ওয়াকিল চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হাজির হয়ে অজ্ঞাতনামা চোরদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুনের সার্বিক দিকনির্দেশনায় , অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান এর তত্ত্বাবধানে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহাব্বুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই (নিঃ) মোঃ হাসানুজ্জামান, এসআই (নিঃ) মোঃ মাসুম বেল্লা ঘটনাস্থলে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করেন। তারা চোরাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল এবং সন্দিগ্ধ চোরের সূত্র ধরে সংগীয় ফোর্সসহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তিন এপ্রিল তারিখ যশোর কোতয়ালী থানাধীন চাঁদপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সন্দিগ্ধ সনাক্তকৃত আসামী মোঃ আলামিন (৩৪) কে গ্রেফতার করেন। তার হেফাজতে থাকা চোরাই মোটরসাইকেল রেজিঃ নং-যশোর-ল-১৪-৫৫৭০ ও অন্যান্য আলামত জব্দ এবং ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য মতে একই এলাকায় সন্দিগ্ধ সনাক্তকৃত আসামী জুয়েল রানা (৩৩) এবং হানিফ (৫৫) দ্বয়কে গ্রেফতার করন।
গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, চোরাই মোটরসাইকেল মাগুরায় জনৈক সেলিমের কাছে বিক্রি করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে সাথে নিয়ে মাগুরা সদর থানা এলাকায় সন্দিগ্ধ সনাক্তকৃত আসামী সেলিম মোল্যা (২৫)কে গ্রেফতার করেন এবং তার হেফাজতে থাকা অতিরিক্ত একটি চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করেন। সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, অত্র মামলার চোরাই মোটরসাইকেল জনৈক কামরুজ্জামান আরমান(২৫) এর নিকট বিক্রি করেছে। তখন কামরুজ্জামান আরমানকে তার এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, অত্র মামলার চোরাই মোটরসাইকেল জনৈক জুনায়েদ হোসেন (২৩) এর নিটক বিক্রি করেছে। এদের তথ্য মতে মাগুরা সদর থানাধীন স্টেডিয়াম পাড়া এলাকা হতে সন্দিগ্ধ সনাক্তকৃত আসামী জুনায়েদ হোসেন (২৩) কে গ্রেফতার করে তার হেফাজতে থাকা অত্র মামলার আলামত চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে ১। মোঃ আল আমিন (৩৪), পিতা-গোলাম মোস্তফা শেখ, স্থায়ী : ব্রহ্মমানী নগর, থানা-লোহাগড়া, জেলা -নড়াইল, বর্তমান : গ্রাম- চাঁদপাড়া, পোঃ- হামিদপুর, থানা-কোতয়ালী, জেলা -যশোর
২। মোঃ জুয়েল রানা (৩৩), পিতা- টিপু শেখ, মাতা- সুফিয়া বেগম, স্থায়ী : গ্রাম- পিংগুলিয়া, থানা- কাশিয়ানি, জেলা -গোপালগঞ্জ, বর্তমান : গ্রাম- চাদপুর, থানা- কোতয়ালী, জেলা -যশোর,
৩। মোঃ আবু হানিফ হাওলাদার (৫৫), পিতা- মৃত ইছাহাক আলী হাওলাদার, মাতা- মোছাঃ জিন্নাত খাতুন, স্থায়ী : গ্রাম- হামিদপুর দক্ষিণপাড়া, থানা- কোতয়ালী, জেলা -যশোর,
৪। মোঃ সেলিম মোল্যা (২৫), পিতা- মৃত হাবিল মোল্যা, মাতা- আনজিরা বেগম, স্থায়ী : গ্রাম- মাইজ পাড়া (প্রাইমারী স্কুল সংলগ্ন), থানা-মহম্মদপুর, জেলা -মাগুরা,
৫। মোঃ কামরুজ্জামান আরমান(২৫), পিতা- মোঃ আব্দুল কাদের, সাং- পারভাটপাড়া, থানা- মোহাম্মদপুর, জেলা- মাগুরা,
৬। মোঃ জুনায়েদ হোসেন (২৩), পিতা- মোঃ মোস্তফা আল আজাদ, সাং- স্টেডিয়ামপাড়া, থানা ও জেলা-মাগুরা।
জব্দকৃত আলামত ও মোটরসাইকেল ০১(এক) টি লাল-কালো পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল, যার রেজিঃ নং- যশোর-ল-১৪-৫৫৭০, যার ইঞ্জিন নং-DHXCMF22576, চেসিস নং-PSUA11CY2MTJ34746, যা আসামীর চোরাই কাজে ব্যবহৃত উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেল। ০১ (এক) টি লাল-কালো পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল, যার ইঞ্জিন নং-DHXCNM35235, চেসিস নং-PSUA11CY4NTB70342, (অতিরিক্ত উদ্ধার) ০১ (এক) টি কালো-লাল রংয়ের পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল, যার ইঞ্জিন নং- DHXCND24830, চেসিস- PSUA11CY1NTH94518.
বাদীর চোরাইকৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের চুয়াডাঙ্গা সদর থানার মামলা নং-০৫। তিন এপ্রিল গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে সোর্পদ করা হয়।