বর্তমান ফুটবলের অন্যতম মহাতারকা আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি হলুদ কার্ড পেলেন তার গুরু আরেক মহাতারকা ও আর্জেন্টাইন সুপারস্টার সদ্য প্রয়াত দিয়েগো ম্যারাডোনাকে গোল উৎসর্গ করতে গিয়ে।
গোল করার পর ম্যারাডোনার স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে গিয়ে বার্সার জার্সি খুলে ফেলেন লিওনেল মেসি। জার্সি খুলতেই বেরিয়ে আসে লিওয়েলস ওল্ড বয়েজের জার্সি নম্বর ১০, যে জার্সি পরে ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় খেলেছেন ‘ফুটবল ঈশ্বর’ম্যারাডোনা। আর মেসির ক্লাব ক্যারিয়ারও শুরু হয়েছিল ওল্ড বয়েজেই।
এরপর দুই হাত বাড়িয়ে সাবেক গুরুর প্রতি ভালোবাসার চুম্বনও ছুড়ে দেন মেসি। কিন্তু মাঠের রেফারি বিষয়টি আবেগের দৃষ্টিতে দেখেননি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বার্সা অধিনায়ককে হলুদ কার্ড দেখান।
এতে অবশ্য তার দোষ নেই। কারণ নিয়ম এটাই। কিন্তু এই হলুদ কার্ড দেখিয়ে স্বস্তিতে নেই রেফারি। তিনি নিজেই চান, ফিফা যেন মেসির হলুদ কার্ড প্রত্যাহার করে নেয়।
ঘটনাটি ঘটে রবিবার দিবাগত রাতে স্প্যানিশ লিগে বার্সেলোনা বনাম ওসাসুনার ম্যাচে। ম্যাচটি কাতালানরা জেতে ৪-০ গোলে। দলের হয়ে দুর্দান্ত একটি গোল করেন আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি। গোলটি করে তা প্রয়াত ম্যারাডোনাক উৎসর্গ করার জন্য বার্সার জার্সি খুলে ভেতরে থাকা ওল্ড বয়েজের জার্সি পরে হাত দুটো উপরে তুলে ধরেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। প্রিয় গুরুকে গোল উৎসর্গ করতে গিয়ে বার্সার জার্সি খোলায় নিয়ম অনুযায়ী হলুদ কার্ড দেখতে হয়েছে মেসিকে।
তবে ম্যাচের রেফারি অ্যান্তোনিও ম্যাতিউ অনুশোচনায় পুড়ছেন মেসিকে হলুদ কার্ড দেখানোর পর থেকে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মেসির সেই হলুদ কার্ড প্রত্যাহার করে নেবে ফিফা।
রেফারি ম্যাতিউ বলেন, “আমি যখন হলুদ কার্ডটি বের করার জন্য পকেটে হাত দিয়েছি, আমার হৃদয়টা ভেঙে গিয়েছিল। আমার মনে হয় ফিফার এই নিয়মটার (জার্সি খুললে হলুদ কার্ড) ব্যতিক্রম নিয়ম তৈরি করা উচিত। যখন কেউ কৃষ্ণাঙ্গ নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন (ব্ল্যাক লাইভস মেটার) সমর্থন করে কিংবা কেউ কোনও কিংবদন্তিকে সম্মান জানায়, তখন ফিফার উচিৎ এটি ক্ষমা করে দেওয়া।
আমি শুধুমাত্র আমার দায়িত্ব পালন করেছি। নিয়ম ভঙ্গ করায় হৃদয়ভাঙা কষ্ট নিয়েই আমি কার্ডটি দেখাতে বাধ্য হয়েছি। ম্যারাডোনা একজন কিংবদন্তি ফুটবলার ছিলেন। আমি আশা করব লা লিগা অথবা ফিফা মেসির এই হলুদ কার্ডটি প্রত্যাহার করে নেবে।”
এসময় রেফারি মেসির সমর্থকদের প্রতি কার্ড দেখানোর এই বিষয়টি ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গিতে না দেখার অনুরোধ জানান।
গত কয়েকদিন ধরেই পুরো বিশ্বের ক্রীড়াঙ্গন শোকের ছায়ায় আচ্ছাদিত হয়ে আছে। বুধবার (২৫ নভেম্বর) আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছেন। তার এই চলে যাওয়াটা পুরো ক্রীড়াঙ্গনে মন খারাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপের প্রায় সব ফুটবল লিগে ম্যাচ শুরুর আগেই এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।