যুক্তরাষ্ট্রের স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সাইটেক স্ট্র্যাটেজিস এবং নেদারল্যান্ডসের এলসিভেয়ার বিশ্বের ১ লাখ গবেষক ও বিজ্ঞানীকে নিয়ে সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে শীর্ষের দিকে অবস্থান করছেন বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান গবেষক মোখলেসুর রহমান।
বিজ্ঞানের ২২টি শাখার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা ওই গবেষক তালিকাটি। এটি রিসার্চ ডেটা কোম্পানি মেন্ডেলিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। গত অক্টোবরের ওই তালিকায় ঠাঁই করে নেওয়া মোখলেসুর রহমানের ৬৫টির বেশি নিবন্ধ বিশ্বের নামকরা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তাঁর সেসব গবেষণা অন্য গবেষকদের কাজে বিশেষ ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। মোখলেসুর রহমানের প্রকাশিত নিবন্ধগুলো সাড়ে ৩ হাজারবারেরও বেশি সাইটেশন হয়েছে। তাঁর গবেষণার এইচ-ইনডেক্স ৩৪। অর্থাৎ, তাঁর এমন ৩৪টি নিবন্ধ আছে যার প্রতিটি কমপক্ষে ৩৪ বার করে উদ্ধৃত হয়েছে। ফলে গবেষকদের তালিকায় শীর্ষ দুই শতাংশ গবেষকের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন এ মেধাবী বিজ্ঞানী।
বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর ফ্রন্টিয়ার ম্যাটেরিয়ালস (আইএফএম)-এ সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে কর্মরত। তরুণ এ গবেষক কাজ করেছেন শক্তিসঞ্চয় এবং শক্তির রূপান্তর নিয়ে। গবেষণার মাধ্যমে তিনি অনেকগুলো নতুন এনার্জি স্টোরেজ ম্যাটেরিয়াল উদ্ভাবন করেছেন।
মোখলেসুর রহমানের উদ্ভাবিত আবিষ্কারগুলো অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রকাশ করেছে। মোখলেসুরের জন্ম বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলার গাংনী থানার মহব্বতপুর গ্রামে।
তিনি গাংনী পাইলট হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত রসায়নে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর বায়োমেডিকেল রিসার্চ-এ আর্সেনিক গবেষক হিসেবে যোগ দেন। বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত ‘শাপলা’ আর্সেনিক ফিল্টারের মূল উপাদান ‘আইরন অক্সাইড ইমপ্রেগনেটেড ব্রিস্ক স্যান্ড’ মূলত গবেষক রহমানের মাস্টার্সের থিসিসের গবেষণার ফল।
গবেষণার জন্য এখন পর্যন্ত তিনি ১০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন।