ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি। অনেকদিন ধরেই বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা বাহিনী এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। মার্কেটিংয়ের কাজেও এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু এর ব্যবহার নিয়ে চিন্তিত হওয়ার মতো মানুষও আছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের অন্যতম শক্তিশালী এক অস্ত্র ফেসিয়াল রিকগনিশন – দুই পক্ষের জন্যই। মস্কোয় থাকা প্রায় দুই লাখ সিসি ক্যামেরা দিয়ে রাশিয়া যুদ্ধবিরোধীদের শনাক্ত করছে। যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার জনকে আটক করেছে রাশিয়া।
ইউক্রেনও গোয়েন্দাদের ধরতে, হতাহতদের পরিচয় জানতে এবং পরিবার একত্রিত করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক পেটার ফাঁসি জানান, ‘‘এটি ব্যবহার করে অভিভাবকদের জানানো যাচ্ছে, তাদের ছেলে বা মেয়ে সংঘাতে মারা গেছে। ভুয়া ইতিবাচকতার উপর কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। এই প্রযুক্তির কাছাকাছি আসতে পারে এমন কোনো প্রযুক্তি আগে ছিল না, বলে এই প্রযুক্তির বিক্রেতারা দাবি করেন। যেটা সত্যি কথা।”
এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিদিন কোটি কোটি ফোন ব্যবহারকারী তাদের ফোন আনলক করছেন। সব মানুষের বায়োমেট্রিক ডাটা আছে। যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা মুখ, যা অন্যের সঙ্গে মেলে না। সে কারণে সবাইকে আলাদাভাবে শনাক্ত করা যায়।
ক্লিয়ারভিউয়ের মতো কোম্পানি এসব তথ্য সংগ্রহ করে। যুক্তরাষ্ট্রের এই কোম্পানির দাবি, তাদের কাছে প্রায় ১০ বিলিয়ন মুখচ্ছবি আছে, যা কারো কাছে নেই। পাবলিক ডোমেইন থেকে এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।
অপরাধীদের খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ কিংবা ইউক্রেনের মতো সরকারকে এসব তথ্য দিয়ে থাকে ক্লিয়ারভিউ। পলিটিক্যাল জিওগ্রাফার স্ফেন ডানিয়েল ভল্ফে বলেন, ‘‘এটা শুধু মানুষ দেখা নয়। এটা প্রকাশ্যে ও ডিজিটাল জগতে মানুষের আচরণ অনুসরণ করার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যে, তারা কোনো সমস্যা তৈরি করবে না। এটিই আমার কাছে সমস্যার কারণ।”
ফেসিয়াল রিকগনিশন ব্যবহার করে সুপারমার্কেটগুলো ক্রেতাদের কেনাকাটার অভ্যাস সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের মতো করে বিজ্ঞাপন দেয়ার চেষ্টা করছে।
আপনার ছবি দেখে যে কেউ আপনার পরিচয় জানতে পারে, যেমন রাশিয়ার সার্চ ইঞ্জিন ইয়ানডেক্স ব্যবহার করে। তবে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তিকে কিছুটা ধোঁকা দেওয়া সম্ভব। মুখে কিছু পরিবর্তন এনে বা পোশাক পরে।
সার্ভিলেন্স টেকনোলজি অনেকদিন ধরেই আমাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। সে কারণে আপনার ডাটার সুরক্ষা সম্পর্কে ভাবা আগের যে-কোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এবং এটি অনলাইন ও বাস্তব জীবন সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।