হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক মুফতি শরীফ উল্লাহকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পৃথক অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-অর্থ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর কমিটির সহসভাপতি ইলিয়াস হামিদীকে।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ওয়ারী) আজাহারুল ইসলাম মুকুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শরীফউল্লাহকে ২০১৩ সালের ৬ মে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ওই মামলায় তিনি ২০ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, ২০১৩ সালের ৫ মের তাণ্ডব ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতের সহিংসতার সঙ্গে তার যোগসূত্র রয়েছে।
স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেশে আসা নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করে হেফাজতে ইসলাম। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত হন।
এরপর থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে রোববার চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেফতার করা হয়। ওই নেতাও ২০১৩ সালের নাশকতার চারটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
গ্রেফতার করা হয়েছেন হেফাজতের সহ অর্থ সম্পাদক মুফতি ইলিয়াসকেও।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের সহযোগী মুফতি ইলিয়াসকে তার (মামুনুল) পরিচালিত মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ৭ দিনের রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে।
তিনি সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। র্যাব- ২ ওয়ারেন্ট অফিসার জামাল উদ্দিন বাদি হয়ে মুফতি ইলিয়াসসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেছেন।
মামলার বরাত দিয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী রমজানুল হক জানান, হেফাজত নেতা মামুনুল হক পরিচালিত ‘তারবিয়াতুল উম্মাহ মাদ্রসা’য় কয়েকজন বসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে এমন খবর পেয়ে র্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।
অভিযানের খবর পেয়ে অন্যরা পালিয়ে গেলেও মুফতি ইলিয়াস হামিদীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। তার সঙ্গে পলাতক ৮ জন ছাড়াও জামাত শিবিরসহ সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনেকে উপস্থি ছিল বলে গ্রেপ্তারের পর মুফতি ইলিয়াস জানায়।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- শরীফ হোসাইন (৩৫), জাকির হোসেন (২৯), শফিকুল ইসলাম (২৮), ইউসুফ (৫২), ফজলুর রহমান (৪০), হেলেন (৫২), মামুন (৪০) ও ইউনুস (৫৫)।
ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্নস্থানে যে নাশকতা করা হয়েছ তার প্রত্যেকটিতে মুফতি ইলিয়াস মদদ দিয়েছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে একযোগে তাদের আরো নাশকতার পরিকল্পনা ছিল বলে গ্রেপ্তারের পর মুফতি ইলিয়াস র্যাবকে জানিয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-অর্থ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর কমিটির সহসভাপতি ইলিয়াস হামিদীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এরই মধ্যে সাত দিনের হেফাজত পেয়েছে পুলিশ।