দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিন রবিবার রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে সকাল থেকেই যানবাহনের চাপ ছিলো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সেই চাপ। হরতালকে উপক্ষো করে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিরবার সকালে রাজধানীর গাবতলী, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, আসাদগেট, মিরপুর সড়ক, ফার্মগেট, বিজয়সরণি, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটর, প্রেস ক্লাব, পল্টন, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা, মতিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি গণপরিবহণও চলছে সমানতালে। সকাল ১১ টায় রাজধানীর মৎস্যভবন মোড় থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। এসময় হরতালের সমর্থনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের একটি ছোট মিছিল পল্টন থেকে প্রেস ক্লাব হয়ে কদম ফোয়ারা ঘুরে আবারও পল্টনের দিকে যেতে চাইলে জ্যামের করেণে বাধাগ্রস্থ হয়। দীর্ঘ সময় জ্যামের মধ্যেই আটকে থাকে আন্দোলনকারীরা।
হরতালের কারণে অফিসে যেতে বিলম্বে হচ্ছে জানিয়ে মোহাম্মদপুর থেকে আসা রুবেল আহমদ বলছিলেন, সকালে গাড়ি থাকলেও সংখ্যায় কম থাকায় যাত্রীদের চাপ ছিলো বেশি। যার ফলে নির্ধারিত সময়ে আসতে পারিনি। মিরপুর থেকে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী রুখসানা জানান, তাকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। রাস্তায় সময়ও নষ্ট হয়নি। মিরপুর-১০ থেকে মেট্রোরেলে করে অল্প সময়েই প্রেস ক্লাব এসে পৌঁছেছেন। উত্তরা থেকে আসা আব্দুর রহমান বলেন, তিনি জরুরি কাজে মতিঝিল আসতে সকালেই বাসা থেকে বের হয়েছেন। মেট্রোরেলে করে ৩০/৩৫ মিনিটেই মতিঝিল পৌঁছে গেছেন। কাজ শেষ করে আবার মেট্রোরেলেই উত্তরায় ফিরে যাবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে মোহাম্মদপুর এলাকার স্কুল পাড়া হিসেবে পরিচিত আসাদ এভিনিউ, ইকবাল রোডসহ আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে গণপরিবহণের বাইরে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ ছিল। আসাদ এভিনিউয়ের দুই পাশে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখো গেছে। ওই এলাকার প্রায় সবকটি স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। অভিভাবকরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে বাচ্চাদেরকে স্কুলে নিয়ে এসেছেন।
ওয়াইডব্লিউসিএ স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শরীফ কাজী জানান, মেয়ের পরীক্ষা থাকার কারণে তিনি শ্যামলী থেকে মেয়েকে নিয়ে স্কুলে এসেছেন। বৃহস্পতিবার হরতালের কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা না নিলেও আজকে ঠিকই পরীক্ষা নিচ্ছেন। শরীফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই বার্ষিক পরীক্ষার সময় এসব হরতাল-অবরোধ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে। রাজধানীতে হরতালের কোনো প্রভাব নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাড়ি চললেও সমস্যা হচ্ছে আতঙ্ক। এই যে, কখন কোথায় গাড়িতে আগুন দেয় সেটা তো কেউ বলতে পারে না। তাই একটা বড় ঝুঁকি নিয়েই বের হতে হয়।