গত মৌসুমের লিগ শিরোপা জেতার পর দলবদলের বাজারেও রিয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনাকে বেশ ভালো ব্যবধানেই পেছনে ফেলেছিল আতলেতিকো মাদ্রিদ। রদ্রিগো দি পল, আঁতোয়ান গ্রিজমান, মাতেউস কুনিয়ার মতো একাধিক কার্যকরী খেলোয়াড় দলে টেনে অনুচ্চারে জানিয়ে দিয়েছিল, শিরোপা ধরে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করতে রাজি তারা।
ওদিকে লিওনেল মেসি আর সের্হিও রামোসের ক্লাব ছাড়ার কারণে দুই শিরোপা প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সা ও রিয়াল কাগজে-কলমে খর্বশক্তির হয়ে গিয়েছিল। বার্সেলোনা মাঠের খেলাতেও ধার হারিয়েছে।
কিন্তু লিগ শুরু হওয়ার পর প্রতি সপ্তাহেই রিয়াল দেখিয়ে দিচ্ছে, কাগজে-কলমে যতই তাদের খর্বশক্তির মনে হোক না কেন, মাঠের খেলায় সেটার প্রকাশ সামান্যই। পয়েন্ট তালিকায় এমনিতেই শীর্ষে ছিল তারা। গত রাতে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী আতলেতিকো মাদ্রিদকে ২-০ গোলে হারিয়ে রিয়াল বুঝিয়ে দিল, রামোস-ভারান চলে গেলেও এই রিয়ালের ধার কমেনি।
করিম বেনজেমা আর মার্কো আসেনসিওর গোলে পুরো তিন পয়েন্ট পকেটে পুরেছে তারা। দুটি গোলেই সহায়তা করেছেন এই মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
প্রথাগত কোনো রাইটব্যাক এই ম্যাচে খেলেননি আতলেতিকোর হয়ে। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মার্কোস ইয়োরেন্তেকে খেলানো হয়েছে সে পজিশনে। ফলে ভিনিসিয়ুসকে আটকে রাখার দায়িত্বটাও তাঁরই ছিল। তবে ভিনিসিয়ুস নিজেকে কোনো একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখেননি। কখনও ডানে খেলেছেন, কখনও বাঁয়ে। প্রথম গোলের সহায়তাও বাঁ দিক থেকে নয়, করেছেন ডান দিক থেকে। সেখান থেকে তাঁর ক্রসে সুন্দর ভলি করে ১৬ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন বেনজেমা।
৩৫ মিনিটে আতলেতিকোকে সমতায় ফেরানোর সুযোগ পান গ্রিজমান। বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রি-কিকটা জায়গামতো মারলেও রিয়ালের বেলজিয়ান গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া দুর্দান্তভাবে আটকে দেন। ম্যাচে চোটের কারণে আর তেমন ভূমিকা রাখতে পারেননি এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয়ার্ধে তাঁর জায়গায় মাঠে নামানো হয় পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড জোয়াও ফেলিক্সকে।
এই পরিবর্তনে আরেকটু হলে কাজও হয়ে যাচ্ছিল। ৫০ মিনিটে ফেলিক্সের পাস থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মাতেউস কুনিয়ার দারুণ শট নিয়েছিলেন, কিন্তু আবারও আটকে দেন কোর্তোয়া।
৫৭ মিনিটেই আবারও রিয়ালের গোল। ভিনিসিয়ুসের ডিফেন্সচেরা পাস থেকে ডি-বক্সের মধ্যে প্রায় ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা আসেনসিও বাঁ পায়ের প্লেসিংয়ে আরও এগিয়ে দেন রিয়ালকে।
এই জয়ে ১৭ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট পাওয়া হয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদের। এক ম্যাচ কম খেলে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে সেভিয়া। ২৯ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আতলেতিকো। ওদিকে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে বার্সেলোনা।