তৃতীয় দিনের শেষ অবধি টিকে রইলেন ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট ও ডেভিড ম্যালান। ২৭৮ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর এই দুই ব্যাটসম্যানই নির্ভরতা দিলেন ইংল্যান্ডকে।
রুট ১৫৮ বলে ৮৬ আর ম্যালান ১৭৭ বলে ৮০ রানে অপরাজিত। রুট-ম্যালানের ২৯৪ বলে ১৫৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ব্রিসবেন টেস্টে অন্তত ড্রয়ের আশা দেখছে ইংল্যান্ড।
তৃতীয় দিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২ উইকেটে ২২০। এর আগে অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংস শেষ করেছেন ৪২৫ রানে অলআউট হয়। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল ১৪৭ রানে।
রুট আর ম্যালান ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার হাসিব হামিদ আর ররি বার্নসের দ্রুত বিদায়ের পর হাল ধরেন। গ্যাবায় তৃতীয় দিনের শেষ দুই সেশনে স্বচ্ছন্দে ব্যাট করেন দুজন। অস্ট্রেলীয় বোলিং আক্রমণকে বেশ আরামে খেলেছেন তারা।
রুট তাঁর ৮৬ রানের ইনিংসে বাউন্ডারি মেরেছেন ১০টি। ম্যালানও মেরেছেন ১০ বাউন্ডারি। রুট আজ একটা রেকর্ডও করেছেন। ৮৬ রানের ইনিংস খেলার পথে ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে এক বর্ষপঞ্জিতে সর্বোচ্চ রান করলেন। ১৫৪১ রান করে তিনি পেছনে ফেলেছেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভনকে।
২০০২ সালে ভন (১৪৮১) সে রেকর্ড করেছিলেন। গোটা ইনিংসটাই রুট খেলেছেন কাউকে কোনো সুযোগ না দিয়ে। অস্ট্রেলীয় স্পিনার নাথান লায়নকে বারবার রিভার্স সুইপ করে হতোদ্যম বানিয়েছেন। ৪০০তম টেস্ট উইকেটের অপেক্ষায় থাকা লায়নকে খুব সহজেই খেলেছেন দুজন।
ম্যালান টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর দ্বিতীয় শতকের অপেক্ষায়। এর আগের ইংল্যান্ডের শেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে তিনি পেয়েছিলেন প্রথম শতক। অধিনায়কের মতো অতটা স্বচ্ছন্দ না হলেও মন্দ খেলেননি। কয়েকবারই মাংসপেশিতে টান লাগায় শুশ্রূষা করতে হয় ম্যালানকে।
সকালে অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেড আক্রমণাত্মকই ছিলেন। কাল দ্বিতীয় দিন তিনি যেখানে শেষ করেছিলেন, আজ যেন শুরু করেছিলেন ঠিক সেই জায়গা থেকেই। ইংলিশ স্পিনার জ্যাক লিচকে আক্রমণ করে খেলেন।
তিনি আজ তাঁর শতকের ইনিংসটি নিয়ে গেছেন ১৫২ রানে। মিচেল স্টার্কও ৬৪ বলে ৩৫ রান করেন। নাথান লায়ন ২৪ বলে ১৫ করে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহকে ৪২৫-এ নিতে ভূমিকা রাখেন। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয় মধ্যাহ্ন বিরতির আধ ঘণ্টা আগে।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ইংলিশ ওপেনারের শুরুটা ছিল সতর্ক। কিন্তু ররি বার্নস এবারও মিচেল স্টার্কের শিকার হন। গত পরশু অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম বলেই স্টার্কের বলে বোল্ড হয়েছিলেন।
আজ তিনি স্টার্কের করা প্রথম ওভারের ষষ্ঠ বলে এলবিডব্লিউ হন। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। যদিও ২৭ বলে ১৩ রানের বেশি তিনি করতে পারেননি। প্যাট কামিন্সের বলে উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারির ক্যাচ হন বার্নস।
আরেক ওপেনার হাসিব হামিদ ৫৮ বলে ২৭ করে আউট হন। তিনি ফিরেছেন স্টার্কের বলে ক্যারির ক্যাচ হয়ে। ৬২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের যখন বিপর্যস্ত অবস্থা, ঠিক তখনই হাল ধরেন রুট ও ম্যালান।
কাল চতুর্থ দিনে ৫৮ রানের ঘাটতি পূরণ করে ইংল্যান্ড কত দূর যেতে পারে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।