শীত আসার শুরু থেকেই অনেকে ব্যবহার শুরু করেছেন রুম হিটার। এটি তাৎক্ষণিক ঘর গরম করলেও নিয়মিত রুম হিটার ব্যবহারে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে কঠিন রোগ। তাই সতর্ক থেকে তবেই ব্যবহার করুন রুম হিটার।
হিটার থেকে নির্গত গরম বাতাস ঘরের আর্দ্রতা শুষে নেয়। এমনকি এই রুম হিটার আবহাওয়ায় উপস্থিত অক্সিজেনকে পুড়িয়ে দেয়। রুম হিটার ব্যবহারে যে নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত-
শুষ্কতা এড়াতে পানি রাখতে পারেন
হিটার চালালে ঘরের আর্দ্রতা কমে যায়, যা ত্বক ও শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। রুমে একটি পানিভর্তি পাত্র রেখে আর্দ্রতা বজায় রাখতে পারেন। হিটার থেকে যে গরম বাতাস বের হয়, তা ত্বককে অত্যন্ত রুক্ষ ও শুষ্ক করে দেয়। হিটারের কারণে অনিদ্রা, মাথাব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কনভেনশান হিটার, হ্যালোজেন হিটার অত্যাধিক ব্যবহারে ব্যক্তিকে অসুস্থ করে তুলতে পারে।
বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন
হিটার ব্যবহারের সময় জানালা বা দরজা আংশিক খোলা রাখুন, যাতে বাতাস চলাচল অব্যাহত থাকে এবং অক্সিজেনের ঘাটতি না হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থাকলে হিটার থেকে দূরে থাকুন।
এছাড়া শ্বাসনালীর রোগীরাও এই যন্ত্রের কারণে সমস্যায় পড়তে পারেন। হিটারের বাতাস এসব রোগীর ফুসফুসে কফ জমাতে শুরু করে। এ কারণে হাঁচি-কাশি হতে পারে এবং ফুসফুসে জমে থাকা কফ শুকিয়ে নানা সমস্যা দেখা দেয়।
অগ্নি-নিরাপত্তার প্রতি সতর্ক থাকুন
হিটার এমন জায়গায় রাখুন যেখানে কাপড়, কাগজ বা অন্য দাহ্য বস্তু কাছাকাছি না থাকে। হিটার চালানোর আগে নিশ্চিত করুন যে বৈদ্যুতিক সংযোগটি ঠিক আছে এবং হিটারটি নির্ধারিত তাপমাত্রায় কাজ করছে কিনা।
শিশু ও পোষা প্রাণী থেকে দূরে রাখুন
রুম হিটার শিশু ও পোষা প্রাণীদের নাগালের বাইরে রাখুন, যাতে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। যে বাড়িতে গ্যাস হিটার বা এলপিজি হিটার বেশি ব্যবহার করা হয়, সেসব পরিবারের শিশুদের মধ্যে অ্যাজমার সমস্যা অধিক দেখা যায়।
এছাড়া কাশি, হাঁচি, বুকে ঘরঘর শব্দ ও ফুসফুসের ক্ষতির লক্ষণ বেশি দেখা যায় এসব পরিবারেই। এই হিটার থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হয়। যা ছোট শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের ওপর কুপ্রভাব ফেলে।
সময়মতো বন্ধ করুন
রুম হিটার দীর্ঘ সময় চালানো থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত সময় হিটার চালালে নানা সমস্যা হতে পারে। এছাড়া রুম হিটার নিয়মিত পরিষ্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণ করুন, যাতে এটি নিরাপদে কাজ করে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সতর্ক থাকুন
হিটার থেকে তাপ সরাসরি শরীরের উপর না লাগানোর চেষ্টা করুন, কারণ এটি ত্বক শুষ্ক এবং ফাটা তৈরি করতে পারে। যদি গ্যাস-ভিত্তিক হিটার ব্যবহার করেন, তাহলে ঘরে কার্বন ডাইক্সাইড নির্দিষ্ট পরিমাপ স্থাপন করা উচিত।
প্রতিদিন হিটার ব্যবহার করলে যা হয়
কাশি, মাথাব্যথা, বমি বা গা গোলানো, চোখ শুকিয়ে যাওয়া, নাক বন্ধ হওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি, অ্যাজমার রোগীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যদি হিটার ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে কিছু সাবধানতা মেনে চলা ভালো। এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি শীতে আরামদায়ক এবং নিরাপদ থাকতে পারবেন।
সূত্র: ইত্তেফাক