লাইসেন্স নবায়ন করাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনে কোটচাঁদপুরের দলিল লেখক সমিতি। বন্ধ করেছেন দলিল লেখা। এতে করে বে-কায়দায় পড়েছেন জমি রেজিষ্ট্রি করতে আসা মানুষেরা।
গতকাল বুধবার থেকে এ আন্দোলন করছেন তারা। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার পাল।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, দলিল লেখক প্রভাষ কুমার নন্দি। যার লাইসেন্স নাম্বার ১৫৫/১৭। এ লাইসেন্সে সে মহেশপুরে দলিল লেখক হিসেবে দলিল লিখতেন। হঠাৎ মটর সাইকেল দূর্ঘটনায় পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন সে ।
এরপর গেল ২০২২ সালের দিকে প্রভাষ লাইসেন্সটি স্থানান্তরের জন্য জেলা অফিসে আবেদন করেন। পরে তা যাচাই-বাছাই হয়ে কোটচাঁদপুর অফিসে দলিল লেখার অনুমতি প্রদান করেন সংশ্লিষ্ট অফিস। এ বছর লাইসেন্স নবায়নের জন্য জেলা অফিসে আবেদন করেন প্রভাষ কুমার নন্দি।
বিষয়টি বুধবার সকালে জানতে পারেন সমিতির সদস্যরা। এরপর সমিতির নেতৃবৃন্দরা যান সাব-রেজিষ্ট্রি কর্মকর্তার নিকট। বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর জমি রেজিষ্ট্রি বন্ধ করে দেন।
এ ব্যাপারে সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার পাল বলেন,সে পঙ্গু মানুষ হওয়ায় গেল এক বছর মানবিক ভাবে সহায়তা করে ছিলাম। তাঁর লাইসেন্স যেখানে সে ওইখানে গিয়ে কাজ করুক। তাতে আমাদের আপত্তি নাই।
সে মহেশপুরের দলিল লেখক হয়ে, এখানে লাইসেন্স নবায়ন করে কাজ করবে,সেটা হতে পারে না। যতদিন এ সমস্যার সমাধান না হবে আমরা ততদিন দলিল লেখা বন্ধ রাখবো।
জমি রেজিষ্ট্র করতে আসা ভুক্তভোগি মুনসুর আলী বলেন,সকালে এসেছি জমি রেজিষ্ট্রি করতে। তারা কাগজ পত্র টাকা পয়সা নেওয়ার পর এখন বলছে জমি রেজিষ্ট্রি হবে না। তবে কি কারনে হবে না,তা আমাদের বলছে না। এতে করে আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।
ফাজিলপুর গ্রামের জমি ক্রেতা হোসেন আলী বলেন,রেজিষ্ট্রি করার সব প্রস্তুতি শেষ করে, এখন বলছে রেজিষ্ট্রি হবে না। কারন জানতে চাইলও তারা আমাদের বলছে না। আমরা এখন চরম বিপাকে পড়েছি।
দলিল লেখক প্রভাষ কুমার নন্দি বলেন,আমার লাইসেন্স নাম্বার ১৫৫/২০১৭। এ লাইসেন্সে আমি মহেশপুরে দলিল লেখতাম। দূর্ঘনায় আমি এক পা হারিয়ে যায়। আমি পঙ্গুত্ব বরণ করি। এরপর আমি লাইসেন্স স্থানান্তর করার জন্য,জেলা কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করেছিলাম।
সে অনুযায়ী লাইসেন্সটি ওই বছরই পরিবর্তন হয়ে আসে। সে থেকে আমি কোটচাঁদপুর অফিসের আওতায় বৈধ্য লেখক। এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছন। ইতোমধ্যে ওই লেখকরা আমার বিরুদ্ধে একটা মামলাও করেছেন।
কোটচাঁদপুর সাব-রেজিস্টার অফিসের সাব-রেজিস্টার (অতিরিক্ত) মেহেদী আল ইসলাম বলেন, প্রভাষ কুমার নন্দীর লাইসেন্সের অভিযোগে নিয়ে দলিল লেখকরা দলিল লেখা বন্ধ করে দিয়েছেন শুনেছি। তারা বিষয়টি নিয়ে আমার কাছেও এসেছিল। অভিযোগ জানিয়েছেন।
তবে এটা বদলি বা পরিবর্তনের দায়িত্ব আমার না। আমার কাজ বছর শেষে যাদের লাইসেন্স আছে, তাদের লাইসেন্স রিনু করার সহায়তা করা। তাদের কাগজপত্র দেখে শুনে, জেলায় পাঠিয়ে দেয়া। জেলা কর্মকর্তা তা যাচাই-বাছাই করেন।
এরপর কার লাইসেন্স কোথায় যাবে। কোনটা থাকবে, কোনটা বাতিল হবে তা সেটা তিনি নির্ধারন করা। এখানে আমার কোন কাজ নাই।
তিনি বলেন, এরপরও আমি এখানে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি। আমার কাজ জমি রেজিষ্ট্রি করা। এর জন্য উভয় পক্ষকে ডেকে বসবো। মেটানো সম্ভব হলে তা করবো।
এতে করে জমি রেজিষ্ট্রি করতে আসা মানুষেরা হয়রানি হচ্ছে কিনা,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,তা একটু হচ্ছে। তবে আজ এখনো কোন জমি রেজিষ্ট্রির জন্য জমা পড়েনি। তবে শুনেছি ১০ টি দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য প্রস্তুত হয়েছে।