মানবদেহের স্বাভাবিক গড় তাপমাত্রা ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনটাই আমরা জেনে এসেছি। কেননা, সেই ছোটবেলায় স্কুলে থেকেই এই তথ্যটা আমাদের শেখানো হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা পুরোনো এই বিশ্বাসকে উল্টে দিয়েছে।
মার্কিন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায় যে, মানবদেহের গড় তাপমাত্রা আর ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস নয়।
গবেষকরা দেখিয়েছেন, মানুষের শরীরের গড় তাপমাত্রা কমে গেছে। মানবদেহের গড় তাপমাত্রা কম হওয়ার প্রধান কারণ হলো আমাদের শরীরের বিপাকীয় হারের পরিবর্তন। গত ২০০ বছরে উন্নত স্বাস্থ্য সুবিধা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ভাল খাদ্য সামগ্রী এবং জীবনযাত্রার উন্নতির কারণে আমাদের শরীরে প্রদাহ কমেছে, যার ফলে আমাদের শরীরের তাপমাত্রাও কমেছে।
গবেষক দলে অন্যতম সদস্য ডা. পার্সনেট আমাদের শরীরের পরিবর্তনও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা যেভাবে জীবনযাপন করি এবং আমাদের চারপাশের পরিবেশ, এই দু’টি উপাদানই আমাদের শরীরে পরিবর্তন আনছে।
তিনি বলছেন, আমাদের ঘরের তাপমাত্রা এখন নিয়ন্ত্রিত, আগের চেয়ে কম ক্ষেত্রে আমরা অণুজীবের সংস্পর্শে আসি এবং আমরা একটি ভাল এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারও খেতে পারি।
ড. পারসননেট আরও বলেছেন, আমরা মনে করি মানুষ সবসময় একই রকম থাকে, কিন্তু এটা সত্য নয়। তাই এটা বিশ্বাস করা বন্ধ করা উচিত যে প্রতিটি মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আসলে, প্রতিটি মানুষের স্বাভাবিক তাপমাত্রা আলাদা এবং এটি অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে।
প্রসঙ্গত, এই গবেষণায়, স্ট্যানফোর্ড হেলথ কেয়ারে ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ৬,১৮,৩০৬ জনের মৌখিক তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছিল।
এছাড়া প্রত্যেকের বয়স, লিঙ্গ, ওজন, উচ্চতা, বিএমআই, ওষুধ খাওয়া এবং স্বাস্থ্যের অবস্থার মতো তথ্যও সংগ্রহ করে স্ট্যানফোর্ডের এই গবেষণাটি কেবল আমাদের দেহ সম্পর্কে আমাদের বোধগম্যতাই বাড়ায় না, তবে এটিও প্রকাশ করে যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ কীভাবে পরিবর্তিত হয়ে চলেছে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস